রাত ৩টা। ঢাকার ব্যস্ত রাস্তাগুলো এখন একেবারেই ফাঁকা। ঈদের আগের রাত হওয়ায় শহরের বেশির ভাগ মানুষ ঘুমিয়ে, কেউবা শেষ মুহূর্তের কেনাকাটায় ব্যস্ত ছিল কিছুক্ষণ আগেও। তবে শান্ত পরিবেশের আড়ালে, একটা ছায়া নেমে আসছে ধীরে ধীরে।
পল্টনের এক ব্যাংকের সামনে দাঁড়িয়ে আছে তিনজন মানুষ। তাদের মুখ ঢাকা কালো মাস্কে। একজনের হাতে ভারী ব্যাগ, অন্যজনের হাতে ছোট্ট ইলেকট্রনিক ডিভাইস। তৃতীয়জন কিছু একটা টাইপ করছে তার মোবাইলে।
“ডোর খুলতে আর মাত্র তিন মিনিট,” চাপা স্বরে বলল রাজন।
“সিসিটিভি অফ?” প্রশ্ন করল কাদের।
“হ্যাঁ, আমরা মাত্র দশ মিনিটের জন্য অদৃশ্য। এর বেশি দেরি করা যাবে না,” মৃদু স্বরে উত্তর দিল তানভীর।
এই তিনজন পেশাদার অপরাধী, যাদের টার্গেট আজকের রাতেই কোটি টাকার ঈদ বোনাস ভর্তি সেই ব্যাংকের ভল্ট।
ভেতরে প্রবেশের পর দ্রুত কাজ শুরু করল তারা। রাজন ব্যাগ থেকে বিশেষ ডিভাইস বের করে সিকিউরিটি সিস্টেম হ্যাক করতে লাগল, কাদের নজর রাখল দরজার দিকে, আর তানভীর ভল্টের কম্বিনেশন ব্রেক করতে ব্যস্ত।
সব কিছু ঠিকঠাকই চলছিল। কিন্তু হঠাৎই…
টিক…টিক…টিক…
একটা সফটওয়্যার অ্যালার্ম ট্রিগার হয়ে গেল।
“শালা! কেউ আমাদের উপস্থিতি ধরে ফেলেছে!” রাজন চেঁচিয়ে উঠল।
তানভীরের হাত কাঁপতে শুরু করল। “আর মাত্র কয়েক সেকেন্ড লাগবে! ধর, আমরা পারব!”
কাদের তখনই দরজার বাইরে কিছু আওয়াজ শুনতে পেল। পুলিশের সাইরেন!
তানভীর শেষ কোড ইনপুট দিল। “ক্লিক!”
ভল্ট খুলে গেল। সামনে নগদ টাকা ভর্তি বিশাল বাক্স।
“সময় নেই! যা পারিস নিয়ে চল!”
তিনজন দ্রুত টাকা ব্যাগে ভরল। কিন্তু বের হওয়ার আগেই দরজার সামনে পুলিশের টর্চলাইট পড়ল।
“হাত তুলে বেরিয়ে আসো! নাহলে গুলি চালানো হবে!”
তানভীর এক সেকেন্ডও ভাবল না। পকেট থেকে স্মোক গ্রেনেড বের করে ছুঁড়ে মারল দরজার দিকে।
“বুম!”
ধোঁয়ায় ভরে গেল চারপাশ। গুলির আওয়াজে ব্যাংকের ভেতর কেঁপে উঠল।
কিন্তু ধোঁয়ার ফাঁক দিয়ে রাজন, কাদের আর তানভীর আরেকটা গোপন দরজা দিয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হলো।
ঢাকা শহর আবারও শান্ত হয়ে গেল, কিন্তু ব্যাংকের ভল্ট ফাঁকা…
এবারের ঈদে অনেকেই খুশি, কিন্তু কারও কারও জন্য এটি এক ভয়াবহ স্মৃতি হয়ে থাকবে…
(সমাপ্ত)
0 coment rios: