اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْتَخِيرُكَ بِعِلْمِكَ، وَأَسْتَقْدِرُكَ بِقُدْرَتِكَ، وَأَسْأَلُكَ مِنْ فَضْلِكَ الْعَظِيمِ، فَإِنَّكَ تَقْدِرُ وَلَا أَقْدِرُ، وَتَعْلَمُ وَلَا أَعْلَمُ، وَأَنْتَ عَلَّامُ الْغُيُوبِ، اللَّهُمَّ إِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّ هَذَا الأَمْرَ خَيْرٌ لِي فِي دِينِي وَمَعَاشِي وَعَاقِبَةِ أَمْرِي – أَوْ قَالَ: عَاجِلِ أَمْرِي وَآجِلِهِ – فَاقْدُرْهُ لِي وَيَسِّرْهُ لِي، ثُمَّ بَارِكْ لِي فِيهِ، وَإِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّ هَذَا الأَمْرَ شَرٌّ لِي فِي دِينِي وَمَعَاشِي وَعَاقِبَةِ أَمْرِي – أَوْ قَالَ: فِي عَاجِلِ أَمْرِي وَآجِلِهِ – فَاصْرِفْهُ عَنِّي وَاصْرِفْنِي عَنْهُ، وَاقْدُرْ لِيَ الْخَيْرَ حَيْثُ كَانَ، ثُمَّ أَرْضِنِي
ইস্তিখারার দোয়া, সূরা ইখলাস, সূরা কাফিরুন এবং সূরা ফাতিহা: বাংলা উচ্চারণ, অর্থ ও বিস্তারিত ব্যাখ্যা
১. ইস্তিখারার দোয়া
ইস্তিখারা হল আল্লাহর কাছে দোয়া চাওয়া যখন আমরা কোনো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে হই বা পথভ্রষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ইস্তিখারা দিয়ে আমরা আল্লাহর সাহায্য কামনা করি এবং তার পক্ষ থেকে সঠিক পথ বা সিদ্ধান্ত মেনে চলার জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি।
ইস্তিখারার দোয়া:
আরবী উচ্চারণ:
اللّهُمّ إني استخيرك بعلمك واستقدرك بقدرتك واسالك من فضلك العظيم، فإنك تقدر ولا اقدر وتعلم ولا اعلم وانت علام الغيوب، اللهم إن كنت تعلم ان هذا الامر خير لي في ديني ومعاشي وعاقبة امري او قال عاجل امري وآجله فاقدره لي ويسره لي ثم بارك لي فيه، وإن كنت تعلم ان هذا الامر شر لي في ديني ومعاشي وعاقبة امري او قال في عاجل امري وآجله فاصرفه عني واصرفني عنه، واقدر لي الخير حيث كان ثم ارضني
বাংলা উচ্চারণ:
“আল্লাহুম্মা ইন্নি আসতাখিরুকা বি'আলমিক্বা ওয়া আসতাকদিরুকা বিকুদরতিক্বা ওয়া আছআলুকা মিন ফাদলিক্বা আল-আযীম, ফা'ইন্নিকা তাকদিরু ওয়ালা আকদিরু, তায়ালামু ওয়ালা আলামু, ওয়ানত আলামুল গইয়ূব। আল্লাহুম্মা ইন কান্তা তায়ালামু অন্না হাযা আমরু খাইরলী ফী দীনী ওয়ামাশী ওয়াইয়াক্বিবাত আমরী অথবা কাল আযাল আমরী ওয়াআজিলিহি ফাক্বদিরহু লী ওয়াইয়ারসিরহু লী থুম্বা বারিক লী ফীহি, ওয়ান কান্তা তায়ালামু অন্না হাযা আমরু শররলী ফী দীনী ওয়ামাশী ওয়াইয়াক্বিবাত আমরী অথবা কাল ফী আযাল আমরী ওয়াআজিলিহি ফাসরিফুহু আন্নী ওয়া সারিফনী আনহু, ওয়াক্বদির লী খাইরান হেইথু কানা থুম্বা আরধনী”
বাংলা অর্থ:
“হে আল্লাহ! আমি তোমার জ্ঞান দ্বারা তোমার কাছে ইস্তিখারা করি এবং তোমার শক্তির দ্বারা তোমার কাছে সাহায্য চাই। আমি তোমার অশেষ অনুগ্রহ কামনা করি, কারণ তুমি শক্তিশালী, আমি শক্তিহীন, তুমি জানো, আমি জানি না, আর তুমি সব কিছুর অজ্ঞাত অবস্থা জানো। হে আল্লাহ! যদি তুমি জানো যে, এই কাজটি আমার দীন, জীবিকা ও পরিণতি বা এই বিষয়ে আমার শীঘ্র এবং বিলম্বিত ফলের জন্য কল্যাণকর হবে, তবে আমাকে তা সফল করতে সাহায্য করুন এবং আমার জন্য এটি সহজ করুন, তারপর এতে আমাকে বরকত দিন। আর যদি তুমি জানো যে, এটি আমার দীন, জীবিকা ও পরিণতি বা শীঘ্র বা বিলম্বিত ফলের জন্য খারাপ, তবে তুমি এটি আমার থেকে সরিয়ে নাও এবং আমাকে এটি থেকে দূরে রাখো, এবং আমার জন্য যেটি ভালো, তা আমার জন্য নির্ধারণ করো এবং আমার জন্য তা সহজ করে দাও, তারপর আমাকে তাতে সন্তুষ্ট রাখো।”
২. সূরা ইখলাস
সূরা ইখলাস ইসলামিক ঐতিহ্যে একটি ছোট কিন্তু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সূরা। এটি আল্লাহর একত্ব এবং তাঁর অসীম শক্তির প্রতীক। এটি ৪টি আয়াতের একটি সূরা এবং এর মাধ্যমে আল্লাহর অসীমত্ব এবং একত্বের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।
আরবী উচ্চারণ:
بِسْمِ اللّهِ الرّحْمَنِ الرّحِيمِ
قُلْ هُوَ اللّهُ أَحَدٌ
اللّهُ الصَّمَدُ
لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ
وَلَمْ يَكُن لَّهُۥۤ۬ۢ۟۞ۚ
وَلَمْ يَكُن لَّهُۥۤ۬ۢ۟۞ۚ
বাংলা উচ্চারণ:
“বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
কুল হুয়া আল্লাহু আহাদ।
আল্লাহুস সামাদ।
লাম ইয়ালিদ ওয়ালা ইয়ুলাদ।
ওয়ালা মাকান লাহু কুফুয়ান আহাদ।”
বাংলা অর্থ:
“আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।
বলুন, তিনি হলেন একমাত্র আল্লাহ।
আল্লাহ, যিনি সবার প্রয়োজন পূর্ণকারী।
তিনি জন্মগ্রহণ করেননি, এবং কোন কিছু থেকে জন্মগ্রহণও করেননি।
আর তার সমকক্ষ কেউ নেই।”
ব্যাখ্যা:
সূরা ইখলাস আল্লাহর একত্বের সুস্পষ্ট ঘোষণা। এতে বলা হয়েছে যে আল্লাহ একমাত্র সত্ত্বা, তিনি সবার প্রয়োজন মেটান, কিন্তু তিনি কোনো কিছু থেকে জন্মগ্রহণ করেননি এবং তিনি কোনো কিছু জন্ম দেননি। অর্থাৎ, তাঁর কোনো সঙ্গী নেই। এটি মুসলমানদের জন্য আল্লাহর একত্বের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস ও আনুগত্যের প্রতীক।
৩. সূরা কাফিরুন
সূরা কাফিরুন একটি ছোট সূরা যা মক্কিতে অবতীর্ণ হয়েছিল। এটি মূলত মুশরিকদের সাথে ইসলামের অবস্থান পরিষ্কার করে। সূরা কাফিরুনে বিশ্বাসী ব্যক্তিরা নিজেদেরকে আল্লাহর একত্বে পূর্ণ মনোনিবেশী রাখেন এবং শির্ক (অসত্য বিশ্বাস) থেকে দূরে থাকেন।
আরবী উচ্চারণ:
بِسْمِ اللّهِ الرّحْمَنِ الرّحِيمِ
قُلْ يَا أَيُّهَا الْكَافِرُونَ
لَا أَعْبُدُ مَا تَعْبُدُونَ
وَلَا أَنتُمْ عَابِدُونَ مَا أَعْبُدُ
وَلَا أَنَا عَابِدٌ مَّا عَبَدتُّمْ
وَلَا أَنتُمْ عَابِدُونَ مَا أَعْبُدُ
لَكُمْ دِينُكُمْ وَلِيَ دِينِ
বাংলা উচ্চারণ:
“বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
কুল ইয়াহ আয়ুহাল কাফিরুন।
লা আ’বুদু মা তাবুদুন।
ওয়ালা আনতুম আ’বিদুন মা আ’বুদ।
ওয়ালা আ'না আ’বিদুম মা আবাদতুম।
ওয়ালা আনতুম আ’বিদুন মা আ’বুদ।
লাকুম দিনুকুম ওয়ালিয়া দিনি।”
বাংলা অর্থ:
“আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।
বলুন, হে কাফিরগণ!
যে আল্লাহর উপাসনা তোমরা করো, আমি সে উপাসনা করি না।
আর তোমরা যে উপাসনা করো, আমি তা করি না।
আর আমি যে উপাসনা করি, তা তোমরা করো না।
তোমাদের জন্য তোমাদের ধর্ম, আমার জন্য আমার ধর্ম।”
ব্যাখ্যা:
সূরা কাফিরুন আল্লাহর একত্বে বিশ্বাসী মুমিনদের জন্য একটি শক্তিশালী বার্তা। এটি মুশরিকদের উদ্দেশ্যে এবং তাদের সাথে সম্পর্কের সীমা নির্ধারণ করে দেয়, এবং শির্ক ও অন্যায় বিশ্বাস থেকে মুমিনদের সতর্ক করে।
৪. সূরা ফাতিহা
সূরা ফাতিহা হল কুরআনের প্রথম সূরা এবং এটি পাঁচটি আয়াতের মাধ্যমে আমাদের দৈনিক জীবন ও প্রার্থনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি একটি প্রশংসাসূচক সূরা যা আল্লাহর প্রার্থনায় মানুষের সাহায্য ও পথ প্রদর্শনের জন্য আবেদন জানায়।
আরবী উচ্চারণ:
بِسْمِ اللّهِ الرّحْمَنِ الرّحِيمِ
الْحَمْدُ لِلّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ
الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ
مَالِكِ یَوْمِ الدِّينِ
إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ
اهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ
صِرَاطَ الَّذِينَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ غَيْرَ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلاَ الضَّآلِّينَ
বাংলা উচ্চারণ:
“বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল হামদুলিল্লাহি রব্বিল আলামীন
আর রাহমানির রাহিম
মালিকি ইয়াওমিদ দীন
ইয়াকা নাবুদু ওয়াইয়াকা নাসতাঈন
ইহদিনাস সিরাতাল মুস্তাকিম
সিরাতাল লাজীনা আন্নামতা আলাইহিম গইরিল মাগদুবি আলাইহিম ওয়ালা দা’ল্লিন”
বাংলা অর্থ:
“আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।
সব প্রশংসা আল্লাহর, যিনি সমগ্র বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের পালনকর্তা।
পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।
যেদিন ধর্মের অধিকারী তিনি, সেদিন সকলের মালিক।
তোমারই আমরা উপাসনা করি এবং তোমারই সাহায্য কামনা করি।
আমাদেরকে সরল পথ প্রদর্শন কর,
তাদের পথ যাদের প্রতি তুমি অনুগ্রহ করেছ,
যাদের প্রতি তোমার অভিশাপ হয়নি এবং যারা পথভ্রষ্ট হয়নি।”
ব্যাখ্যা:
সূরা ফাতিহা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সূরা, যা মুসলিমদের প্রার্থনায় প্রতিদিন পাঁচবার পড়তে হয়। এটি আমাদের দুনিয়া এবং পরকালীন জীবনের সফলতা অর্জনে আল্লাহর সাহায্য এবং পথপ্রদর্শনের জন্য দোয়া করে।
ইস্তিখারা নামাজ: বিস্তারিত আলোচনা, বিশ্লেষণ ও ব্যাখ্যা
ইস্তিখারা নামাজ ইসলামিক প্রথায় এক গুরুত্বপূর্ণ নামাজ যা আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়ার উদ্দেশ্যে করা হয়। যখন কোন মুসলমান জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে অক্ষম হন বা সন্দেহে থাকেন, তখন তিনি ইস্তিখারা নামাজ পড়েন। এই নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে সর্বোত্তম পথের জন্য সাহায্য কামনা করা হয়। ইস্তিখারা নামাজ শুধু একটি সাধারণ দোয়া নয়, বরং এটি একটি আল্লাহর কাছে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য গভীর বিশ্বাস এবং নির্ভরশীলতার প্রকাশ।
ইস্তিখারা নামাজের গুরুত্ব
ইস্তিখারা নামাজের অন্যতম প্রধান গুরুত্ব হলো এটি মুসলমানদের জন্য একটি পথনির্দেশক হিসেবে কাজ করে। বিশেষ করে, জীবনে যখন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে হয় যেমন বিবাহ, চাকরি, ব্যবসা, স্থাবর সম্পত্তি ইত্যাদি বিষয়ে, তখন মুসলমানরা ইস্তিখারা নামাজ পড়েন যাতে আল্লাহ তাদের সঠিক পথ দেখান।
এটি একটি মহান প্রথা যা বিশ্বাস, মনোভাব এবং আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আস্থা প্রকাশ করে। এটি অন্ধকারে আলো দেখানোর মতো, যেখানে আল্লাহ আমাদের জন্য সবচেয়ে ভালো সিদ্ধান্ত গ্রহণে সাহায্য করেন।
ইস্তিখারা নামাজ পড়ার পদ্ধতি
ইস্তিখারা নামাজ সাধারণত দুই রাক'আত (প্রার্থনা) নামাজ পড়া হয় এবং এরপর ইস্তিখারা দোয়া করা হয়। নিচে বিস্তারিতভাবে প্রক্রিয়াটি ব্যাখ্যা করা হলো:
১. নামাজের জন্য প্রস্তুতি
প্রথমত, নামাজের জন্য আপনি শুদ্ধ পোশাক পরিধান করবেন এবং নামাজ পড়ার স্থান পরিষ্কার রাখবেন। অজু করে ফেলার পরে নামাজের জন্য ইস্তেহারা করার উদ্দেশ্যে মনোযোগী হবেন।
২. দুই রাক'আত নামাজ
এবার আপনি দুটি রাক'আত নামাজ পড়বেন। সুরা ফাতিহা এবং অন্যান্য সুরা পড়ার পর সাধারণভাবে আল্লাহর প্রতি দোয়া করবেন।
৩. ইস্তিখারা দোয়া
নামাজের পর, আপনি আল্লাহর কাছে ইস্তিখারা দোয়া করবেন। ইস্তিখারা দোয়ার কথাগুলি একেবারে সঠিকভাবে উচ্চারণ করতে হবে, যাতে আপনি আপনার উদ্দেশ্য স্পষ্টভাবে আল্লাহর কাছে পৌঁছাতে পারেন।
ইস্তিখারা দোয়া হল:
আরবী উচ্চারণ:
اللّهُمّ إني استخيرك بعلمك واستقدرك بقدرتك واسالك من فضلك العظيم، فإنك تقدر ولا اقدر وتعلم ولا اعلم وانت علام الغيوب، اللهم إن كنت تعلم ان هذا الامر خير لي في ديني ومعاشي وعاقبة امري او قال عاجل امري وآجله فاقدره لي ويسره لي ثم بارك لي فيه، وإن كنت تعلم ان هذا الامر شر لي في ديني ومعاشي وعاقبة امري او قال في عاجل امري وآجله فاصرفه عني واصرفني عنه، واقدر لي الخير حيث كان ثم ارضني
বাংলা অর্থ:
“হে আল্লাহ! আমি তোমার জ্ঞান দ্বারা তোমার কাছে ইস্তিখারা করি এবং তোমার শক্তির দ্বারা তোমার কাছে সাহায্য চাই। আমি তোমার অশেষ অনুগ্রহ কামনা করি, কারণ তুমি শক্তিশালী, আমি শক্তিহীন, তুমি জানো, আমি জানি না, আর তুমি সব কিছুর অজ্ঞাত অবস্থা জানো। হে আল্লাহ! যদি তুমি জানো যে, এই কাজটি আমার দীন, জীবিকা ও পরিণতি বা এই বিষয়ে আমার শীঘ্র এবং বিলম্বিত ফলের জন্য কল্যাণকর হবে, তবে আমাকে তা সফল করতে সাহায্য করুন এবং আমার জন্য এটি সহজ করুন, তারপর এতে আমাকে বরকত দিন। আর যদি তুমি জানো যে, এটি আমার দীন, জীবিকা ও পরিণতি বা শীঘ্র বা বিলম্বিত ফলের জন্য খারাপ, তবে তুমি এটি আমার থেকে সরিয়ে নাও এবং আমাকে এটি থেকে দূরে রাখো, এবং আমার জন্য যেটি ভালো, তা আমার জন্য নির্ধারণ করো এবং আমার জন্য তা সহজ করে দাও, তারপর আমাকে তাতে সন্তুষ্ট রাখো।”
৪. ইস্তিখারা দোয়া করার পর:
দোয়া করার পর, আপনার কাজের প্রতি আল্লাহর সাহায্য পাওয়ার জন্য মনোযোগী হোন এবং তাতে পূর্ণ আস্থা রাখুন। যদি আপনাকে কোনো সিদ্ধান্তের সঠিক পথ বুঝে আসে, তবে আপনি তার অনুসরণ করবেন।
ইস্তিখারা নামাজের সুবিধা
-
আল্লাহর সাহায্য পাওয়া:
ইস্তিখারা নামাজের মাধ্যমে আপনি আল্লাহর সাহায্য কামনা করেন, যা আপনার জীবনের সিদ্ধান্তগুলোর জন্য একটি মঙ্গলজনক পথ প্রবর্তন করে।
-
বিশ্বাসের শক্তি:
যখন আপনি আল্লাহর কাছে দোয়া করবেন, তখন আপনার ভিতরে একটি আত্মবিশ্বাসী মনোভাব তৈরি হয়। আপনি বিশ্বাস করবেন যে, আল্লাহ আপনার জন্য সঠিক পথ নির্ধারণ করবেন এবং আপনি কোন সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন তা আল্লাহর পরিকল্পনার সাথে মিলিত হবে।
-
মানসিক শান্তি:
ইস্তিখারা নামাজ ও দোয়া একটি মানসিক শান্তি নিয়ে আসে। আপনি যখন কোনো সিদ্ধান্ত নিতে অক্ষম থাকেন, তখন এটি আপনাকে আশ্বস্ত করে যে আল্লাহ আপনাকে সঠিক পথ দেখাবেন।
ইস্তিখারা নামাজের উপকারিতা ও কার্যকারিতা
-
সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ:
ইস্তিখারা নামাজ আমাদের সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করে। আল্লাহ আমাদের হৃদয়ে সঠিক সিদ্ধান্তের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করেন এবং ভুল সিদ্ধান্ত থেকে বিরত রাখেন।
-
গাইডেন্স পাওয়ার মাধ্যমে শান্তি:
ইস্তিখারা নামাজের মাধ্যমে আল্লাহ আমাদের হৃদয়ে শান্তি ও সঠিক পথের নির্দেশনা প্রদান করেন, যা আমাদের জীবনে স্থিতিশীলতা আনে।
-
তাড়াহুড়ো বা দুঃশ্চিন্তা দূরীকরণ:
জীবনের যে কোনো বড় সিদ্ধান্তের সামনে, যেমন ব্যবসা বা বিয়ে, ইস্তিখারা আমাদের তাড়াহুড়ো ও দুঃশ্চিন্তা দূর করে এবং আল্লাহর উপর ভরসা রাখার মনোভাব তৈরি করে।
বিশ্লেষণ ও আধ্যাত্মিক দিক
ইস্তিখারা নামাজের মাধ্যমে আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সমস্যা এবং সিদ্ধান্তের মধ্যে আল্লাহর সাথে একটি সংযোগ স্থাপন করি। আল্লাহর সাথে এই সংযোগ আমাদের আধ্যাত্মিক উন্নতি সাধনে সহায়ক হয়। আমাদের উপর আস্থা রেখে আল্লাহর প্রতি দ্বীন ও উপাসনার মাধ্যমে এক নতুন শক্তি এবং মনোবল পাওয়া যায়।
এছাড়া, ইস্তিখারা নামাজের মাধ্যমে মানুষের জীবনে একটি মেধাবী, সঠিক এবং সুস্থ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, যা শুধু ব্যক্তিগত জীবনেই নয়, বরং সমাজ ও পরিবারেও একটি ইতিবাচক পরিবর্তন এনে দেয়।
ইস্তিখারা নামাজ ইসলামিক প্রথার একটি গুরুত্বপূর্ণ দোয়া ও নামাজ পদ্ধতি যা জীবনের সঠিক সিদ্ধান্তের জন্য আল্লাহর সাহায্য চায়। এই নামাজের মাধ্যমে আমরা আমাদের জীবনে যেসব অস্থিরতা, দ্বিধা ও অবিশ্বাসের মধ্যে আছি, সেগুলির থেকে মুক্তি পাই এবং আল্লাহর নির্দেশনায় আমাদের জীবন পরিচালিত করি। এটি আমাদের আধ্যাত্মিক উন্নতির পাশাপাশি, ভালো সিদ্ধান্ত নেওয়ার একটি শক্তিশালী উপায়।