গল্প লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
গল্প লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

রবিবার, ১৬ মার্চ, ২০২৫

অপরাধের ঈদ

অপরাধের ঈদ


রাত ৩টা। ঢাকার ব্যস্ত রাস্তাগুলো এখন একেবারেই ফাঁকা। ঈদের আগের রাত হওয়ায় শহরের বেশির ভাগ মানুষ ঘুমিয়ে, কেউবা শেষ মুহূর্তের কেনাকাটায় ব্যস্ত ছিল কিছুক্ষণ আগেও। তবে শান্ত পরিবেশের আড়ালে, একটা ছায়া নেমে আসছে ধীরে ধীরে।


towfiqi 23


পল্টনের এক ব্যাংকের সামনে দাঁড়িয়ে আছে তিনজন মানুষ। তাদের মুখ ঢাকা কালো মাস্কে। একজনের হাতে ভারী ব্যাগ, অন্যজনের হাতে ছোট্ট ইলেকট্রনিক ডিভাইস। তৃতীয়জন কিছু একটা টাইপ করছে তার মোবাইলে।

“ডোর খুলতে আর মাত্র তিন মিনিট,” চাপা স্বরে বলল রাজন।

“সিসিটিভি অফ?” প্রশ্ন করল কাদের।

“হ্যাঁ, আমরা মাত্র দশ মিনিটের জন্য অদৃশ্য। এর বেশি দেরি করা যাবে না,” মৃদু স্বরে উত্তর দিল তানভীর।

এই তিনজন পেশাদার অপরাধী, যাদের টার্গেট আজকের রাতেই কোটি টাকার ঈদ বোনাস ভর্তি সেই ব্যাংকের ভল্ট।

ভেতরে প্রবেশের পর দ্রুত কাজ শুরু করল তারা। রাজন ব্যাগ থেকে বিশেষ ডিভাইস বের করে সিকিউরিটি সিস্টেম হ্যাক করতে লাগল, কাদের নজর রাখল দরজার দিকে, আর তানভীর ভল্টের কম্বিনেশন ব্রেক করতে ব্যস্ত।

সব কিছু ঠিকঠাকই চলছিল। কিন্তু হঠাৎই…

টিক…টিক…টিক…

একটা সফটওয়্যার অ্যালার্ম ট্রিগার হয়ে গেল।

“শালা! কেউ আমাদের উপস্থিতি ধরে ফেলেছে!” রাজন চেঁচিয়ে উঠল।

তানভীরের হাত কাঁপতে শুরু করল। “আর মাত্র কয়েক সেকেন্ড লাগবে! ধর, আমরা পারব!”

কাদের তখনই দরজার বাইরে কিছু আওয়াজ শুনতে পেল। পুলিশের সাইরেন!

তানভীর শেষ কোড ইনপুট দিল। “ক্লিক!”

ভল্ট খুলে গেল। সামনে নগদ টাকা ভর্তি বিশাল বাক্স।

“সময় নেই! যা পারিস নিয়ে চল!”

তিনজন দ্রুত টাকা ব্যাগে ভরল। কিন্তু বের হওয়ার আগেই দরজার সামনে পুলিশের টর্চলাইট পড়ল।

“হাত তুলে বেরিয়ে আসো! নাহলে গুলি চালানো হবে!”

তানভীর এক সেকেন্ডও ভাবল না। পকেট থেকে স্মোক গ্রেনেড বের করে ছুঁড়ে মারল দরজার দিকে।

“বুম!”

ধোঁয়ায় ভরে গেল চারপাশ। গুলির আওয়াজে ব্যাংকের ভেতর কেঁপে উঠল।

কিন্তু ধোঁয়ার ফাঁক দিয়ে রাজন, কাদের আর তানভীর আরেকটা গোপন দরজা দিয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হলো।

ঢাকা শহর আবারও শান্ত হয়ে গেল, কিন্তু ব্যাংকের ভল্ট ফাঁকা…

এবারের ঈদে অনেকেই খুশি, কিন্তু কারও কারও জন্য এটি এক ভয়াবহ স্মৃতি হয়ে থাকবে…

(সমাপ্ত)





Welftion Love Of Welfare
 দৈনিক অনুসন্ধান

Welftion Love Of Welfare : প্রিয় সুহৃদ,  নতুন প্রজন্মের আগ্রহী লেখকদের প্রতি অনুরোধ, আমাদের কাছে লেখা পাঠিয়ে দুই সপ্তাহ থেকে তিন মাস অপেক্ষা করুন। একই লেখা একাধিক জায়গায় পাঠানো হলে কিংবা প্রকাশিত হলে আমরা সেই লেখককে আর গ্রহণ না করতে বাধ্য হবো। আপনার লেখা / ছবি / মতামত / অভিযোগ পাঠান ~ ✉ towfiqsultan.help@gmail.com ,
editorial.tds@outlook.com , editorial.tdse@gmail.com 
দৈনিক অনুসন্ধান শেরে বাংলা নগর, ঢাকা, বাংলাদেশ



 📢 দৃষ্টি আকর্ষণ লেখা পাঠান~ ✉ editorial.tds@outlook.com , editorial.tdse@gmail.com towfiqsultan.help@gmail.com
DA





  DA
লেখা পাঠান~ ✉ editorial.tds@outlook.com , editorial.tdse@gmail.com towfiqsultan.help@gmail.com 
 
আপনার লেখা / ছবি / মতামত / অভিযোগ পাঠান ~ ✉ towfiqsultan.help@gmail.com , editorial.tds@outlook.com , editorial.tdse@gmail.com দৈনিক অনুসন্ধান শেরে বাংলা নগর, ঢাকা, বাংলাদেশ। সংবাদ দৈনিক অনুসন্ধান - ওয়েল্ফশন নিউজ আপডেট - Welftion Welfare Educational Leaders Friendly Trusted Investigation Organization Network. সত্যের সন্ধানে বলিষ্ঠ, সত্য প্রকাশে নির্ভীক... নবীন- প্রবীন লেখীয়োদের প্রতি আহ্বান: সাহিত্য সুহৃদ মানুষের কাছে ছড়া, কবিতা, গল্প, ছোট গল্প, রম্য রচনা সহ সাহিত্য নির্ভর আপনার যেকোন লেখা পৌঁছে দিতে আমাদেরকে ই-মেইল করুন- editorial.tdse@gmail.com লেখার সাথে আপনার নাম ঠিকানা, যোগাযোগ নাম্বার যুক্ত করে দিয়েন- সম্ভব হলে নিজের ছবি + লেখার সাথে মানানসই ছবি। ইংরেজি লেখা পাঠাতে ও এই ই-মেইল টি ব্যাবহার করতে পারেন। ✉️ই-মেইল: editorial.tdse@gmail.com - ধন্যবাদ 📧 towfiqsultan.help@gmail.com

শুক্রবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

 নিয়মিত নামাজ পড়তেন, রোজা রাখতেন রোহানা বেগমে

নিয়মিত নামাজ পড়তেন, রোজা রাখতেন রোহানা বেগমে

Welftion Love Of Welfare  

      

শামুক ইয়াছিন আরাফাত

 

শামুক
ইয়াছিন আরাফাত

স্বামীর মৃত্যুর পর রোহানা বেগমের সংসারে অভাব-অনটন লেগেই আছে। আজ যদি সেই শামুকটা থাকত, তাহলে টাকা-পয়সার অভাব হতো না। ঘটনাটি প্রায় পঞ্চাশ বছর আগের, যখন রোহানা সপ্তম শ্রেণিতে পড়তেন। শিমপুর গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে তার জন্ম। পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের মতো রোহানাও ধার্মিক ছিলেন। নিয়মিত নামাজ পড়তেন, রোজা রাখতেন।

সেদিন বৃহস্পতিবার ছিল, স্কুল তাড়াতাড়ি ছুটি দিয়েছিল। বাড়ি ফিরে জোহরের নামাজ আদায় করে দুপুরের খাবার খেয়ে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেন। বিকেলে তিনি দুই কিলোমিটার দূরে বাগানবাড়িতে ঘুরতে গেলেন, যেখানে তাদের গরুর খামার ছিল। আছরের নামাজের পর ফিরে আসেন। সেদিন রাতে পড়ালেখা শেষ করে এশার নামাজ আদায় করে ঘুমের প্রস্তুতি নিলেন। ঘুমানোর আগে ওযু করে দোয়া পড়ে শুয়ে পড়লেন।

হঠাৎ তিনি স্বপ্ন দেখলেন—একজন পাগলী পাহাড়ের রাস্তা ধরে আসছে এবং তার হাতে থাকা একটি শামুক রোহানাকে যত্নে রাখতে বলল। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘুম ভেঙে গেল। পাশের মসজিদ থেকে ফজরের আযান ভেসে এলো। সেদিন আর ঘুম এল না তার। ফজরের নামাজ আদায় করে কোরআন তেলাওয়াত করলেন, তারপর বাড়ির অন্যান্য কাজ শেষ করলেন।

বাড়ির রোয়াকের সামনে এক পাগলীকে দেখে সবাই মজা করছিল। সে তার হাতে থাকা শামুকটি কাউকে দিচ্ছিল না। রোহানা কাছে গিয়ে দেখলেন, এ সেই পাগলী—যাকে তিনি স্বপ্নে দেখেছিলেন! তার পরনে একই ধরনের পোশাক ছিল। রোহানা শামুকটি চাইলে পাগলী বলল, "হ্যাঁ, তোকেই দেব, তোকেই দেব।"

শামুকটি দেখতে সাধারণ হলেও, যেন এক রহস্যময় কিছু ছিল তার মাঝে। শামুকটি পাওয়ার পর পাগলীটি কোথায় যেন মিলিয়ে গেল—আর কখনো কেউ তাকে দেখেনি। উপস্থিত সবাই বলল, "পাগলের জিনিস! ভালো কিছু হবে না।" তারা হাসাহাসি করলেও রোহানা চুপ করে রইলেন। স্বপ্নের কথা কাউকে বলেননি, এমনকি তার মাকেও না।

চার মাস পর রোহানা অষ্টম শ্রেণিতে ভর্তি হলেন। পরিবার ভালো পাত্র দেখে ইলহামের সঙ্গে তার বিয়ে ঠিক করল। বিয়ের পর শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার সাত দিন পর তিনি বাপের বাড়ি এলেন। আলমারি খুলতেই দেখলেন—শামুকটি নেই! তিনি তো আসার সময় আলমারির চাবি মায়ের কাছে দিয়ে এসেছিলেন। তাই মাকে জিজ্ঞেস করলেন। তার মা বললেন, "এত দামি জিনিসের মধ্যে সামান্য শামুক রেখে লাভ কী? ওটা বাইরে ফেলে দিয়েছি।"

মায়ের কথায় রোহানার মাথায় যেন বজ্রাঘাত হলো! যেখানে শামুকটি ফেলা হয়েছিল, সেখানেই কয়েকদিন ধরে খুঁজলেন, কিন্তু কোথাও পেলেন না। তাকে পাগলের মতো খুঁজতে দেখে মা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলেন। তখনই রোহানা সব খুলে বললেন। মেয়ে যে এত মূল্যবান কিছু হারিয়েছে, তা বুঝতে পেরে মা কান্নাকাটি করে ক্ষমা চাইলেন। কিন্তু যা হারিয়েছে, তা তো আর ফেরত আসবে না।

আজ বহু বছর পেরিয়ে গেছে। বয়সের ছাপ পড়েছে শরীরে, চুল সাদা হয়ে গেছে, গায়ের রং মলিন হয়ে গেছে। পাঁচ মেয়ে ও দুই ছেলেকে রেখে স্বামীও চলে গেছেন না ফেরার দেশে। স্বামী থাকতে কখনো অভাব বুঝতে হয়নি। কিন্তু আজ, সংসারে অর্থকষ্ট চেপে বসেছে। আজ যদি সেই শামুকটি থাকত!

সেই শামুকটি ছিল এক আশ্চর্য বস্তু—যেটি একটি টাকার তলে রেখে, তলের ভিতরে না তাকিয়ে যতই টাকা নেওয়া হোক না কেন, সেই টাকা কখনো শেষ হতো না। কিন্তু আজ সেটি নেই...

সমাপ্ত