এলবাম (অ্যালবাম) : ধৃষ্টতা তোমার
শিক্ষক, কবি ও লেখক তৌফিক সুলতান স্যার
একটি প্রেম, একরাশ অবহেলা, এক বুক না-পাওয়ার হাহাকার…
এই তিনের গভীর সংমিশ্রণে গড়া কবিতা-এলবাম “ধৃষ্টতা তোমার” যেন এক ক্ষতবিক্ষত আত্মার দিনলিপি।
এই এলবামে ভালোবাসা নেই—আছে ভালোবাসার অপমান।
নেই আবেগের প্রশ্রয়—আছে আবেগের ভাঙা কাঁচ।
কবিতাগুলোতে প্রেমিক যেন আর্তনাদ করে না,
সে প্রতিশোধও নেয় না—
সে শুধু নিজের নিঃশ্বাস দিয়ে লিখে যায়,
কিভাবে ভালোবাসা ‘ধৃষ্টতা’ হয়ে দাঁড়ায়,
যখন তা উপেক্ষিত হয়।
তৌফিক সুলতান রচনা সমগ্র:
তৌফিক সুলতান—একজন নিঃশব্দ শব্দশিল্পী,
যার কলমে প্রেম ফুল নয়, বিষ খেয়ে ফুটে ওঠা আগুন।
তিনি প্রেমের গল্প বলেন না,
বলেন সেইসব গল্প,
যেখানে প্রেম একতরফা,
ভালোবাসা একতরফা,
প্রত্যাশা একতরফা—
আর ব্যথা? ব্যথা সর্বত্র, সর্বদা।
তাঁর রচনার বৈশিষ্ট্যঃ
-
ছন্দে বিষ, ভাষায় আগুন:
প্রতিটি পঙক্তি যেন প্রেমের নামে প্রতারণার প্রতিবাদ। -
অন্তর্মুখী আর্তি:
শব্দগুলো বাহিরে শোনা না গেলেও, ভিতরে গর্জে ওঠে। -
অনুভবের রক্তাক্ত চিত্রাঙ্কন:
তিনি অনুভব আঁকেন, অক্ষরে নয়—যন্ত্রণায়। -
মুহূর্তকে আজীবনে রূপদান:
তাঁর কবিতায় একটি চোখের তাকানোই হয়ে ওঠে অনন্ত অপেক্ষা,
একটি বিকেল মানে একটি জীবন,
একটি ‘না’ মানে এক জীবনের ধ্বংস।
কেন পড়বে “ধৃষ্টতা তোমার”?
কারণ তুমি যদি কখনও কাউকে নিঃস্বার্থে ভালোবেসে থাকো,
আর সে যদি তোমার দিকে ফিরেও না তাকায়—
তবে এই কবিতাগুলো তোমার ভেতরের না বলা কথা হয়ে দাঁড়াবে।
তুমি চুপচাপ পড়ে যাবার সময়,
হঠাৎ বুকের ভেতর একটা টান অনুভব করবে,
চোখের কোণ ভারী হয়ে উঠবে,
আর মনে হবে—
“এই কবিতাটা তো আমারই লেখা হতে পারতো।”
তৌফিক সুলতান লিখেন না, তিনি বাঁচেন শব্দে।
আর তাঁর প্রতিটি কবিতা—একটি ছোট মৃত্যু, একটি গভীর প্রতীক্ষা।
সহজ করে বলেছিলাম ভালোবাসি
সহজ করে বলেছিলাম—ভালোবাসি,
না ছিল নাটক, না ছিল অলংকারের ভাষা।
শুধু একটুখানি ভরসা, নিয়ে চোখে একটুখানি কল্পনার ছায়া।
তুমি ফিরলে না,
বললে—"আমিতো ভালোবাসি না",
তোমার এই কথাটা শরীর পোড়ায় না ঠিক,
কিন্তু বুকের ভেতরটা যেন কাচ হয়ে ভেঙে চুরমার হয়ে যায়।
তীব্র জ্বরে যেমন শরীর কাঁপে,
তেমন কাঁপে হৃদয়ের প্রতিটা কোণা—
তোমার ওই নিস্পৃহ বাক্যে,
যা আমার স্বপ্নটাকে নির্বাসনে পাঠিয়ে দিলো।
তুমি বুঝলে না—
ভালোবাসা কতটা গভীর থেকে জন্ম নেয়,
সে কি চিঠির মতো পড়া যায়? না কি প্রতিদিনের দেখা যায় তার মাপ?
না, তুমি বুঝবে না,
কতটা ভালোবাসলে তোমার মাঝে ডুবে যেতে ইচ্ছা করে,
যেখানে নিঃশ্বাস না থাকলেও শান্তি থাকে,
তুমি তো জানো না সেই মৃত্যুর মতো ভালোবাসার মানে।
তুমি জানো না; মনখারপেও অনুভব হয় মৃত্যুর মতো যন্ত্রণা।
তবু আমি তোমায় ভালোবেসেছিলাম,
সহজ করে, নিঃস্বার্থে,
যেমন শিশুরা আকাশে ঘুড়ি তোলে—
ছিঁড়ে যাবে জেনেও হাসে, তবু ভালোবাসে আকাশটাকে।
একটা বিকেল, এক জীবন
ছলছল চোখে অপেক্ষা করেছিলাম—
রোদ ফুরোনো এক বিকেলে,
সমুদ্রসমান খুশি জমে ছিল পলকে,
শুধু তোমার একটা ছায়ার আশায়।
রাস্তার শেষ গলিটা দেখেছিল পঁচিশবার,
হাওয়ায় উড়ছিল চুল, বুকে জমেছিল একরাশ স্বপ্ন।
তুমি আসবে—এইটুকু বিশ্বাসে
আমি পুরো একটা জীবন গুছিয়ে রেখেছিলাম কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষায়।
কিন্তু তুমি এলে না,
আসলে না আসার মধ্যেই ছিল এক চিরন্তন না-বলা অভিমান।
সে মুহূর্তে আমি কিছু চাইনি,
না চা, না গল্প, না গান—শুধু তুমি।
এই একটা বিকেল ছিল আমার আজীবনের নাম,
এইটুকু সময়ই ছিল আমার চিরন্তন স্বপ্নের ঠিকানা।
মানুষ এভাবেই বাঁচে—মুহূর্তে,
আর সেই মুহূর্তকেই পরিণত করে জীবন নামক এক নিঃশব্দ কাব্যে।
আমার কেউ নেই
একে একে সবাই দখল করে নিলো,
কে হবে কোন তারা—মৃত্যুর পর ভাগ হয়ে গেলো।
আমার কপালে রইলো শুধু চারটে দেয়াল,
আর কিছু ওষুধ—জীবন বাঁচানোর শেষ ব্যর্থ চাল।
তুমি শুনলে না, আর একটিবারও না,
আমার ডাকটা যেন বাতাসেই বিলীন হ’লো ধ্বনিবিহীনা।
তোমার ঘুম এত গভীর কেনো আজ?
আমার চোখে তো আজও জেগে আছে কাল রাতের সাজ।
এসব কথা কাকে বলবো আমি?
কান পেতে থাকা কেউ নেই—শুধু নীরব দেয়াল গুনে গুনে চলে সময় থেমে যাওয়া রবি।
কষ্টগুলোও যেন অভিমানে চুপ,
আমার পাশে নেই কোনো শব্দ, নেই কারো উষ্ণ স্পর্শের রূপ।
আমি এখন কেবলই একটা উপস্থিত অনুপস্থিতি,
যার কান্নাও জলের শব্দ নয়, বরং এক দীর্ঘশ্বাসের নীরব প্রতিচ্ছবি।
তবু রাত জেগে জেগে ভাবি—
কেউ কি একদিন পড়বে এই দেয়ালে লেখা ধুলিমাখা দিনলিপি?
আমার কেউ নেই—এই বাক্যটা আজ আর ভয় নয়,
এ যেন আমারই ঠিকানা হয়ে গেছে, সব আবেগ ছুঁড়ে ফেলা এক শূন্যের বই।
নিভৃতে থাকে কেউ
কেউ কেউ থাকে… নিভৃতে, নিঃশব্দে, চাহিদাহীন,
ভালোবাসার ভাষা না বলেও বুঝিয়ে দেয় দিনকে দিন।
আপনার অবহেলাও তারা নিজের মতন মেনে নেয়,
অতিরিক্ত ব্যস্ততা মানে তাদের কাছে—আপনি ভালো আছেন এটাই সুখের প্রেরণায়।
হোঁচট খেলে হাত বাড়িয়ে ধরা,
আপনার নীরব যন্ত্রণায় তারা খুঁজে নেয় ব্যথার ধরা।
অন্যমনস্ক চোখের গভীরে পড়ে নেয় অজানা কষ্ট,
ভালোবাসে আপন মনে—না বলা অনেকটা অভিমানের মতো নরম-নরম গল্প।
এলোমেলো চুলে আলতো ছোঁয়া—
কোনো দাবি নেই, নেই কোনো বদলের শর্ত বা বোঝা।
ভরসার কাঁধ তারা নিজে থেকেই এগিয়ে দেয়,
না চাইতেই তারা আপনাকে জড়িয়ে ধরে—একটা চুপচাপ ভালোবাসার ওমে।
তাদের ভালোবাসা স্রোতের উল্টো নয়,
তারা প্রতিদান চায় না, শুধু আপন মানুষটা ঠিক থাকুক—এই কামনায় রয়।
এই মানুষগুলোই হয় পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর অনুভব,
যাদের ভালোবাসা নিঃশব্দ, নিঃস্বার্থ—আর অবর্ণনীয়ভাবে গভীর।
আমি কি কারো প্রয়োজন ছিলাম?
আমি কাউকে কখনো "অসম্ভব" রকম ভালোবাসিনি,
তাই হয়ত কেউ আমাকে ভালোবাসেনি, অতল গভীর মনভরে।
কখনো পছন্দের তালিকায় ছিলাম না,
আমি ছিলাম প্রান্তিক, উপেক্ষিত, এক নামহীন ঠিকানা।
কেউ আমাকে বলেনি—তোমার লাগবেই লাগবে,
আমার ছায়াও হয়তো কারো আরাম হয়নি কখনও।
ক্লান্ত হৃদয়ের আশ্রয় হতে পারিনি,
আমাকে দেখে কেউ বলেনি—“সকল যন্ত্রণা দূর হয়ে যায়।”
কেউ কখনো কাঁদেনি আমার জন্য,
আমার হারিয়ে যাওয়া কি আদৌ কারো কাছে কিছু মানে রাখে?
পৃথিবীর সুন্দরতম মানুষ হতে চেয়েছিলাম,
কিন্তু কারো চোখে কখনো ‘প্রিয়’ হয়ে উঠিনি।
হয়ত আমি ছিলামই ভুল সময়ে জন্মানো নিঃশব্দ কোনো প্রশ্ন,
যার উত্তর কেউ খোঁজেনি কখনো…
তবু প্রতিদিন আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে
আমি এখনো নিজের নাম খুঁজি—কোনো এক পছন্দের তালিকায়।
নীরবতা যখন বোঝা হয়
এমন শান্ত জীবন কে চেয়েছিল মাবুদ…?
না আনন্দে হাসি, না শোকে কান্না—
আঘাত আসে, হৃদয় নড়ে না,
ভাঙা স্বপ্নেও চোখ জল ঝরে না।
উৎসবের ঢোল বেজে যায় দূরে,
আমি বসে থাকি এক কোণে, শূন্যতা ঘিরে।
পাশে হাসির মুখ—আমি শুধু চেয়ে দেখি,
মনে হয়, সেই আমি আর নেই, হারিয়ে গেছে সেদিন থেকেই।
কোনো দুঃখে কাঁপে না বুক,
কোনো আশায় জ্বলে না সূর্যলোক।
প্রতিটি দিন কেটে যায় নিঃশব্দে,
যেন অনুভবগুলো সব ঘুমিয়ে আছে অন্তরে।
জানি, এ জীবনের নাম হয় না ‘জীবন’,
এ এক চলমান ছায়া—শুধু সময়ের বরণ।
তবু, হে প্রভু, তোমার কাছেই মিনতি—
এই অনুভূতির জাগরণ করো নতুন সূচনাতে।
নামহীন সম্পর্ক
কিছু কিছু সম্পর্ক এভাবেই চলে,
নেই কোনো নাম, নেই কোনো খোঁলে-দোলা কলমে লেখা ছোঁলে।
না প্রেম, না বন্ধুত্ব—তবু হৃদয়ে তার স্থান,
চুপচাপ একটা মানুষ, জানে না সে জান।
নেই কোনো শর্ত, নেই কোনো চাওয়া,
তবু মনটা শুধু তার খোঁজেই কাঁদে, হাসে, গাওয়া।
একটু দেরি হলে, চোখে পড়ে ছায়া,
তবু মুখে বলে না কিছু, অন্তরে বাড়ে মায়া।
সে সুখে থাকুক—এই চাওয়া একমাত্র,
নিজে থাকুক নিঃসঙ্গ, তবু তার হোক প্রহর সোনার।
কেউ ভাবে সে পাগল, কেউ জানে না কিছু,
তবু প্রতিটি নিঃশ্বাসে তার নাম থাকে রিচু।
প্রকাশ্যে কেউ পাশে থাকে, কেউবা থাকে গোপনে,
অভিমানে না ভেঙে পড়ে, বরং হাসে আপন মনেপনে।
ভালোবেসে যায় নীরবে, দায়িত্ব ছাড়া দায়িত্বে,
সে বুঝে নেয় সব, কেউ না বললেও হৃদয়ের কথাতে।
এই নামহীন সম্পর্ক, হয়ত সমাজ বোঝে না,
তবু একে লুকিয়ে রাখে না হৃদয়ের কোনো কোণে জমা।
সে জানে না কোনো জেন্ডার, জানে না রীতি, ধর্ম, জাতি,
তবু তার ভালোবাসা পবিত্র, শ্রদ্ধেয়, এক অন্তর্দৃষ্টি।
কিছু কিছু সম্পর্ক, তাই হয়ত স্বর্গীয়,
নাম নেই, চাহিদা নেই—তবু সে ভালোবাসায় অলৌকিক।
কে বলবে না এটি প্রেম?—যা চায় না কোনো প্রাপ্তি,
তবু সে ভালোবাসে, নিজেকে হারিয়ে নিঃস্বার্থ আত্মতৃপ্তি।
ধৃষ্টতা তোমার
ধৃষ্টতা তোমার—
আমার নীরবতাকে দুর্বলতা ভাবা,
চোখের জলকে পরাজয়ের নাম দেওয়া।
যে ভালোবাসা বুক পুড়িয়ে দিয়েছিল,
তাকে তুমি উপহাস বললে!
তুমি ভেবেছো—
আমি না বললে কিছুই বলিনি,
কিন্তু হৃদয়ের ভাষা সবসময় মুখে আসে না,
তাও তো বুঝোনি!
ধৃষ্টতা তোমার—
ভালোবাসার গভীরতাকে প্রশ্ন করো,
অথচ তুমি তো কখনও তল ছুঁয়ে দেখোনি।
তুমি শুধু ভেসে গেছো,
আমার আবেগের স্রোতে...
মায়া পড়ে গেলে...
মানুষ ভালো লাগে, হয়তো
চোখের চাওয়া, হাসির রেখায়,
চলনে, গলায়, কথার ঢেউয়ে—
তখনো সেটা “ভালো লাগা”।
কিন্তু একদিন,
কোনও কারণ ছাড়াই,
তাকে ভাবতে ইচ্ছে করে,
তার অভাবে মন ভার হয়,
আর তার নাম শুনলে চোখে পানি আসে।
সেই মুহূর্তেই—
ভালোবাসা চুপিচুপি এসে বসে পড়ে বুকে।
সেই মানুষটা তখন আর মুখ নয়, নয় শরীর, নয় আচরণ,
সে একটুকু মায়া,
যেটা মুছে ফেলার মতো না,
ভুলে যাওয়ার মতো না।
তার রূপ মুছে গেলেও,
তার গলায় কাঁপুনির শব্দটা,
তার না বলা কথাগুলোর ছায়া—
এসব জিনিস বেঁচে থাকে মনের গোপন চৌকাঠে।
ভালোবাসা কোনো কারণে আসে,
কিন্তু থেকে যায় কারণহীন এক মায়ায়।
তোমার মায়া দিয়ে গড়া অনুভবগুলোকে—চলো ছড়িয়ে দিই অক্ষরে, কণ্ঠে, হৃদয়ে।
ভালোবাসা কোনো সমাজের টেবিলের ফাইল নয়,
যেটা সিলমোহর দিয়ে চালানো লাগে।
ভালোবাসা মানে এক আত্মিক টান, এক মায়ার বাঁধন,
যেটা লোকে কি বলবে, সমাজ কী ভাববে—এই সব কিছুর অনেক ঊর্ধ্বে।
শুধু প্রেম নয়, এক বিপ্লবী অনুভব:
"লোকে কি বলবে?"
লোকে কি বলবে, কে কাকে চায়—
এই প্রশ্নে কি থেমে থাকে হৃদয়?
ভালোবাসা কি পাসপোর্ট দেখে আসে,
নাকি সমাজের সংজ্ঞা মেনে বাঁধে ভালোবাসার ভাষা?
আমি তাকে ভালোবাসি—
কারণ সে আমার নিঃশ্বাসে বাজে,
তাকে ভালোবাসি, কারণ সে অকারণেই আমার সব হয়ে ওঠে।
কে কী বলল, কে বাঁকা হাসল—
তাতে কি দহন থামে,
তাতে কি এই টান কমে যায়?
ভালোবাসা মানে তো অভ্যন্তরের বিদ্রোহ—
এক চুপচাপ যুদ্ধ, সমাজের শব্দবাণে না কাঁপা
একটুকু নামহীন আশ্রয়,
যেটা কেবল "তোমার কাছে আমি"।
লোকে তো সবসময়ই কিছু না কিছু বলবেই—
কিন্তু যাকে ভালোবাসি, তার চোখে চেয়ে যদি দেখি,
সে এখনো আমার হয়ে থাকতে চায়—
তাহলে বাকিদের মুখ আমার কাছে নিষ্প্রয়োজন।
কবির এই কথা গুলো—"মানুষকে ছুঁয়ে যাক এই কাব্যভুবন"—একটা শপথের মতো, এক অদৃশ্য আলোর মতো, যেটা হৃদয়ে গেঁথে থাকে।
তৌফিক সুলতান স্যার - এর কবিতাগুলো যেন শুধু পড়ার জন্য নয়, মনের গহীনে ঢুকে, রক্তে মিশে, নিঃশ্বাসে জেগে থাকে—এইরকম একটা আবহ তৈরি করে।
১. আবৃত্তি সিরিজ: “ধৃষ্টতা তোমার” – হৃদয়জুড়ে শব্দ
-
আবৃত্তিকার: নারী ও পুরুষ দুই কণ্ঠে, তীব্র অথচ কোমল আবেগময়তা
-
ব্যাকগ্রাউন্ড: মৃদু বৃষ্টির শব্দ, দূর থেকে বাজছে কোনও স্মৃতির সুর
-
আবহসংগীত: সেতার, পিয়ানো ও মন খারাপ করা দূরাগত বাঁশির সুর
-
ভিডিও ভিজ্যুয়াল: রোদে ভেজা জানালা, ফেলে যাওয়া চিঠি, এক কাপ চা আর অনুপস্থিত কারো ছবি
২. নির্বাচিত কবিতা থিম (নাম ও অনুভব):
-
ধৃষ্টতা তোমার: ভালোবাসাকে যারা অবজ্ঞা করেছে, তাদের উদ্দেশ্যে এক সুপ্ত প্রতিবাদ
-
আমি সহজে বলি না: ভালোবাসা কখনো প্রকাশ পায় না শব্দে, কেবল দৃষ্টিতে
-
তুমি বুঝোনি কখনো: সে তো পাশে থেকেও বোঝেনি, কি একা ছিলে তুমি
-
অভিমানে নীরবতা: যেখানে চোখ কথা বলে, মুখ থেমে যায়
-
তবুও আমি থাকি: ভালোবাসার আর্তনাদ, ফিরে আসার প্রতীক্ষায়
"ধৃষ্টতা তোমার" কবিতাটির জন্য একটি আবৃত্তি স্ক্রিপ্ট , যাতে ভালোবাসা ও অবজ্ঞার মিশ্রণ এবং প্রতিবাদের অনুভূতি ফুটে ওঠে। এখানে তৌফিক সুলতানের কবিতার গভীরতা ও সুরের প্রভাব যেন স্পষ্টভাবে প্রকাশ পায়।
আবৃত্তি স্ক্রিপ্ট: "ধৃষ্টতা তোমার"
ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক: মৃদু সেতারের সুর এবং দূর থেকে বৃষ্টি পড়ার শব্দ।
(প্রথম কণ্ঠ, পুরুষ)
তুমি ছিলে এখানে,
এক সময়ে ভালোবাসা ছিল।
তোমার চোখে চোখ রেখে,
আমিও নিজেকে হারিয়ে ফেলেছিলাম।
কিন্তু, তুমি তো জানলে না,
কখনও জানলে না।
(দ্বিতীয় কণ্ঠ, নারী)
ধৃষ্টতা তোমার—
এখনো আমাকে খোঁজে,
তুমি যখন বিদায় নিলে,
আবার ফিরে আসার ইচ্ছা,
তোমার মনেও জন্ম নেয়নি।
(প্রথম কণ্ঠ)
তুমি যা ভাবোনি,
তাহলে কেন এত ভালোবাসা?
কেন এত মায়া?
এটা শুধু ক্ষোভ নয়,
এটা তো এক প্রতিবাদ—
এটা আমার অশ্রু নয়,
এটা আমার আত্মসম্মান।
(দ্বিতীয় কণ্ঠ)
ধৃষ্টতা তোমার—
যতটা অবজ্ঞা,
ততটাই তীব্র প্রতিবাদ।
আমি কোনোদিনও তোমার কাছে ফিরে আসবো না,
তোমার ঐ অবহেলায় এক সেলফি নয়,
বরং এক প্রতিজ্ঞা রচিত হবে।
(দ্বিতীয় কণ্ঠ, নারী)
তুমি জানো না,
তুমি যা ছেড়ে দিলে,
এখনো তাতে ফুল ফুটে থাকে,
তবে আমি জানি,
তোমার এই ধৃষ্টতায়
আমার মুক্তির শুরু।
(প্রথম কণ্ঠ, পুরুষ)
এতদিন যে ভালোবাসা ছিল,
এখন তা এক প্রতিবাদ—
তোমার কাছে ফিরতে নয়,
বরং নিজেকে আবিষ্কার করার তীব্র আকাঙ্ক্ষা।
ধৃষ্টতা তোমার—
এখন আমার জন্য এক মুক্তি,
এখন আমি হয়ে উঠি সত্য।
ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক: ধীরে ধীরে মৃদু বাঁশির সুর এবং সেতারের সুরে কম্পোজ।
এটি একটি আবৃত্তির স্ক্রিপ্ট যা কবিতার মূল ভাব ও অবজ্ঞার পরিপ্রেক্ষিতে একটি প্রতিবাদী সুর তৈরি করে। এতে দুটি কণ্ঠের সংমিশ্রণ এবং গভীর অনুভূতি সঙ্গতভাবে প্রতিফলিত হবে।
"আমি সহজে বলি না"
ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক: মৃদু পিয়ানো সুর, শান্ত ও নিস্তব্ধ পরিবেশ। কখনো কখনো সেতারের সুরেও হালকা প্রক্ষেপণ।
(প্রথম কণ্ঠ, পুরুষ)
আমি কখনো সহজে বলি না,
আমার ভালোবাসা—
শব্দে প্রকাশ পায় না।
তোমার চোখের দিকে তাকালে,
তবে কী যেন স্পষ্ট হয়ে ওঠে,
আমার নিঃশব্দ ভালোবাসা।
(দ্বিতীয় কণ্ঠ, নারী)
তুমি যখন বলো না,
তবে আমি বুঝে যাই,
তোমার চুপ থাকা,
তোমার হৃদয়ের গল্প বলে যায়।
এই ভাষা, এই নীরবতা,
শব্দের চেয়ে বেশি কিছু বলে।
(প্রথম কণ্ঠ)
কথা না বললেও,
আমার চোখের মধ্যে,
এক পৃথিবী রয়েছে তোমার জন্য—
আর সেই পৃথিবী,
সব কিছু জানিয়ে দেয়,
যখন তুমি আমার দিকে তাকাও।
(দ্বিতীয় কণ্ঠ)
তুমি তো সহজে বলো না,
কিন্তু তোমার দৃষ্টির ভাষা,
তাতে আমি ভাষা খুঁজে পাই—
কথার চেয়ে বেশি,
এক পৃথিবী ভালোবাসা।
(প্রথম কণ্ঠ, পুরুষ)
তোমার চোখে,
আমি আমার অনুভবগুলো দেখি,
শব্দের প্রয়োজন নেই,
কারণ এই দৃষ্টিতে
তোমার ভালোবাসা—
যতটা দৃশ্যমান,
তার চেয়ে অনেক বেশি গোপন।
(দ্বিতীয় কণ্ঠ, নারী)
হয়তো আমি জানি,
তুমি ভালোবাসো,
তবে তোমার নীরবতায়,
আমার হৃদয়ে এটাই চিরকালীন থাক,
তোমার চুপ থাকা,
আমার ভালোবাসার অম্লান স্মৃতি।
ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক: পিয়ানো সুর একদম নীচু, শান্তভাবে শেষ হতে থাকে।
"তুমি বুঝোনি কখনো" কবিতার জন্য আবৃত্তি স্ক্রিপ্ট যা একাকীত্ব, অবহেলা এবং এক অন্য রকম গভীর দুঃখকে ফুটিয়ে তোলে। এখানে অনুভূতিগুলোর মিশ্রণ এবং দুঃখের অভ্যন্তরীণ প্রতিফলন দেখা যাবে।
"তুমি বুঝোনি কখনো"
ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক: মৃদু বাঁশির সুর, কিছুটা মন খারাপ করা টেম্পো, যাতে একাকীত্বের অনুভূতি প্রকট হয়।
(প্রথম কণ্ঠ, নারী)
তুমি ছিলে পাশে,
তবে কখনও বুঝোনি—
যতটা কাছাকাছি,
ততটাই দূরে ছিলে তুমি।
তোমার উপস্থিতি,
আসলে একাকীত্বকেই বাড়িয়ে তোলে,
কারণ তুমি তো—
বোঝোইনি কখনো।
(দ্বিতীয় কণ্ঠ, পুরুষ)
আমি জানি,
তুমি পাশে ছিলে,
তবে তুমি কি জানো,
তোমার চোখে আমার প্রস্থান?
তুমি তো বুঝোনি কখনো,
যতটা একা ছিলাম,
ততটাই তীব্র ছিল এই নীরবতা।
(প্রথম কণ্ঠ, নারী)
তুমি যতই কাছে থেকেও,
আমার মাঝে এক পৃথিবী ছিল
অজানা একাকীত্বে,
যেখানে আমি একা ছিলাম।
তোমার শূন্যতায়,
বয়সগুলো কাটলো,
কিন্তু তুমি তো,
বোঝোনি কখনো।
(দ্বিতীয় কণ্ঠ, পুরুষ)
কখনো কি অনুভব করেছ,
তোমার পাশেই আমি ছিলাম,
তবুও কতটা দূরে—
তুমি তো কখনো বোঝোনি।
তুমি তো,
আমার একাকীত্বের শব্দ শুনোনি,
আমার চুপ থাকা,
তোমার কাছে নীরবতা হয়ে গেছে।
(প্রথম কণ্ঠ, নারী)
তোমার পাশে,
কিন্তু আমার একাকী চোখে,
এক মহাকাল সারা হয়ে যায়,
এবং তুমি তো—
বলোনি কখনো,
তুমি বুঝোনি কখনো,
কি একা ছিলাম আমি।
(দ্বিতীয় কণ্ঠ, পুরুষ)
তুমি তো কখনও জানো না,
কি গভীর ছিল আমার একাকীত্ব,
তোমার কাছে যে আমি ছিলাম—
তাহলেও কি কখনও
আমাকে বুঝলে তুমি?
ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক: মৃদু বাঁশির সুর এবং সেতারের একদম শান্ত সুর, ধীরে ধীরে ক্ষীণ হতে থাকে।
এই স্ক্রিপ্টে কবিতার মূল বিষয়, "সে তো পাশে থেকেও বোঝেনি, কী একা ছিলে তুমি," এক ধরনের বিষাদময় অথচ গভীর একাকীত্বের অনুভূতিকে আবেগপূর্ণভাবে তুলে ধরা হয়েছে। দুটি কণ্ঠের সংমিশ্রণ এবং নীরবতার মধ্যে একাকীত্বের প্রতিফলন খুব শক্তিশালী হবে যদি এটি ভিডিও বা অডিও রূপে উপস্থাপন করা হয়।
"অভিমানে নীরবতা" কবিতাটির জন্য আবৃত্তি স্ক্রিপ্ট এখানে অভিমান এবং নীরবতার মাধ্যমে যে গভীর শূন্যতা ও চুপ থাকা প্রকাশিত হয়, তা খুবই স্পষ্টভাবে ফুটিয়ে তুলতে হবে। দৃষ্টির ভাষা এবং মুখের নীরবতা যে এক নতুন পৃথিবী তৈরি করে, সেটাই প্রধান বিষয়।
"অভিমানে নীরবতা"
ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক: মৃদু পিয়ানো সুর, একটু শূন্যতার অনুভূতি, যা আবেগের গভীরতা বাড়াবে।
(প্রথম কণ্ঠ, নারী)
তুমি যখন আমাকে ভুল বুঝলে,
আমার চোখে তখন—
এক পৃথিবী কথা ছিল।
কিন্তু মুখ থেমে ছিল,
শব্দ হারিয়ে গিয়েছিল।
অভিমান আমার,
এখন চোখের ভাষায় শূন্য হয়ে দাঁড়িয়ে,
আমি কিছু বলি না,
তবে তুমি বুঝতে পারো না,
কি গভীর আমার নীরবতা।
(দ্বিতীয় কণ্ঠ, পুরুষ)
তুমি কি জানো,
তোমার চুপ থাকা কেমন?
এটা শুধু নীরবতা নয়,
এটা আমার কাছে এক ক্ষত।
তুমি যখন কিছু বলোনি,
তোমার চোখই সব বলেছিল,
তবে আমি বুঝতে পারিনি,
আর তুমি—
মুখে কিছু না বললেও,
তোমার চোখে এক প্রতিবাদ ছিল।
(প্রথম কণ্ঠ, নারী)
আমি তো কখনো বলি না,
কিন্তু চোখের ভাষা বলবে অনেক কিছু।
তোমার সামনে,
আমি চুপ ছিলাম,
কিন্তু আমার চোখের মধ্যে
একা থাকা একটা গল্প ছিল—
এক গল্প যেখানে
শব্দের প্রয়োজন নেই,
তবে তুমি দেখনি কখনো।
(দ্বিতীয় কণ্ঠ, পুরুষ)
তুমি তো কিছু বলোনি,
কিন্তু আমি জানি—
তোমার নীরবতায়
এক পৃথিবী দুঃখ লুকানো ছিল।
তুমি তো একবারও বুঝলে না,
কিভাবে তোমার চোখে,
কথা না বললেও,
এক জীবন্ত অভিমান ছিল।
(প্রথম কণ্ঠ, নারী)
এখন তোমার কাছে,
আমার চোখেই—
সবটা বলা হয়ে গেছে।
মুখ আর কিছুই বলে না,
এখন শুধু নীরবতা,
আর তাতে আছে এক দুঃখ,
যেটা কখনো বলে না কেউ।
ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক: মৃদু পিয়ানো সুর ধীরে ধীরে ম্লান হতে থাকে, যেন একটি ক্লান্তির অনুভূতি ছড়িয়ে যায়।
এই স্ক্রিপ্টের মাধ্যমে, "অভিমানে নীরবতা—যেখানে চোখ কথা বলে, মুখ থেমে যায়" এই ভাবনা একেবারে ভালোভাবে ফুটে উঠবে। এটি যদি ভিডিও বা আবৃত্তি হিসেবে উপস্থাপন করা হয়, তাহলে অভিমান, চোখের ভাষা, এবং নীরবতার বিষয়টি আরও শক্তিশালী এবং গভীরভাবে অনুভূত হবে।
"তবুও আমি থাকি" কবিতার জন্য একটি আবৃত্তি স্ক্রিপ্ট, যেখানে ভালোবাসার আর্তনাদ, অপেক্ষা এবং ফিরে আসার প্রতীক্ষার বিষয়টি গভীরভাবে প্রকাশিত হয়েছে। এই কবিতায় এক প্রকার অনন্ত আশা ও মনঃকষ্টের মিশ্রণ দেখা যায়।
আবৃত্তি স্ক্রিপ্ট: "তবুও আমি থাকি"
ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক: সেতারের সুর, কিছুটা ভারী, এক ধরনের বিরহ এবং আশার মিশ্রণ।
(প্রথম কণ্ঠ, নারী)
তুমি চলে গেছো,
যেখানে তোমার কোনো খোঁজ নেই,
তবে আমি তবুও আছি।
এই পৃথিবী অচেনা,
তবে তোমার অপেক্ষায়,
আমার হৃদয় আজও স্থির।
(দ্বিতীয় কণ্ঠ, পুরুষ)
আমি তো জানি,
তুমি ফিরে আসবে না,
তবে হৃদয়ের গভীরে,
এক আশা জ্বলছে—
তবুও, আমি থাকি।
ভালোবাসার প্রতীক্ষায়,
এমন এক নীরব আর্তনাদ।
(প্রথম কণ্ঠ, নারী)
ভালোবাসার প্রতিটি শব্দ,
আমার হৃদয়ে শুধু তুমি।
এমন এক অপেক্ষা—
যেখানে কোনো দিন শেষ হবে না,
তবুও, আমি থাকি।
তুমি না ফিরলেও,
তোমার দিকে এক টুকরো পথ রেখে,
অবিচ্ছিন্নভাবে আশা করি।
(দ্বিতীয় কণ্ঠ, পুরুষ)
তুমি চলে গেলে,
তবে আমি তো জানি,
যতই তুমি দূরে থাকো,
তবুও তোমার স্মৃতি আমাকে ধরে রাখে,
এই আর্তনাদ—
এটি শুধু ফিরে আসার একটি চিরন্তন অপেক্ষা।
(প্রথম কণ্ঠ, নারী)
তুমি নেই,
তবুও আমি ভালোবাসি,
এই ভালোবাসায় একটি অদৃশ্য সংযোগ—
যেখান থেকে তুমি ফিরে আসবে,
এমন কোনো সময় আমি জানি না,
কিন্তু তবুও,
আমি থাকি।
(দ্বিতীয় কণ্ঠ, পুরুষ)
এটা যেন কিছুই নয়,
তবে আমার মনে—
ভালোবাসার এই আর্তনাদ,
তবুও আমাকে বেঁধে রাখে,
এবং প্রতিটি দিন,
আমি তোমার ফেরার অপেক্ষায় থাকি।
ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক: সেতারের সুর ধীরে ধীরে ম্লান হতে থাকে, যেন একটি দীর্ঘ প্রতীক্ষার অনুভূতি সৃষ্টি হয়।
এই স্ক্রিপ্টে, "তবুও আমি থাকি—ভালোবাসার আর্তনাদ, ফিরে আসার প্রতীক্ষায়" ভাবনা যেন গভীরভাবে ফুটে উঠবে। এটি যদি আবৃত্তি বা ভিডিও আকারে উপস্থাপন করা হয়, তাহলে অনুভূতি এবং আশা আরও স্পষ্টভাবে দর্শকের কাছে পৌঁছাবে।
৩. কবিতা বই (প্রিন্ট + ই-বুক):
নাম: ধৃষ্টতা তোমার – তৌফিক সুলতান রচনাসমগ্র
-
ছাঁদ: আধুনিক, কঠিন শব্দে গাঁথা সহজ অনুভব
-
ভেতরে থাকবে:
-
কবির নিজস্ব অনুভবের নোট
-
পাঠকের চিঠি (যারা কবিতায় নিজের জীবন খুঁজে পেয়েছে)
-
প্রতিটি কবিতার পাশে থাকবে এক পংক্তির চাবিকাঠি—“এই পংক্তি তোমার জন্য”
-
৪. ক্যাপশন সিরিজ (তেপান্তর মিডিয়ায়):
ছোট্ট লাইন, যেন ছুরির মতো কেটে যায়—
-
“তোমার ধৃষ্টতাই আজ আমার কবিতার জন্ম।”
-
“তুমি তো বুঝলে না—না বলা ভালোবাসাও গর্জে ওঠে।”
-
“আমি সহজ ছিলাম, তুমি অতল—তাই হারিয়ে গেলাম।”
জীবন হোক শুক্রবারের মতো
জীবন হোক শুক্রবারের মতো—
সুন্দর, সরল, নিঃস্বার্থ পথে,
যেখানে নেই হিংসা বা দ্বেষ,
শুধুই মমতা, প্রার্থনার স্পর্শে।
হোক সে সকাল—এক শান্তি ভরা,
যেখানে হৃদয় হয় পবিত্র ধারা।
বেলা হোক কাবার ছায়া আঁকা,
প্রেম আর তাওবার মোলায়েম ফাঁকা।
যেনো প্রতিটি ক্লান্তি মুছে যায়,
একটুখানি সিজদায়—দেহ মন ঠাঁই পায়।
চোখে জমা স্বপ্নগুলো ধোয়া,
হৃদয় হোক মুক্ত—কোনো মালিন্য না থাকো ছোঁয়া।
শুক্রবার যেমন করে জাগায় আশা,
তেমনি জীবন জাগাক ভালোবাসা।
নিরবতা হোক দোয়ার মতো শান্ত,
প্রেম হোক চিরন্তন, মোহহীন কান্ত।
ভালোবাসার চিঠি
সে এখন অন্য কারো চোখে খুঁজে নেয় স্বপ্নের মানে,
আমার দেওয়া ভালোবাসা পড়ে থাকে, চুপচাপ জানে।
তার প্রতিটি কথা, আদর, আজও হৃদয়ে ধরে,
ভাঙা মনটা প্রতিদিনই তাকে যত্ন করে গড়ে।
যার ঠোঁটে ছিলাম আমি, সে ঠোঁট আজ অন্য নামে,
তবু তার হাসির রেখা খুঁজে ফিরি রাতের স্বপ্ন থামে।
সে আমাকে ভুললেও, আমি তো ভুলিনি আজো,
তাকে নিয়ে লেখা কবিতাগুলো পড়ে সময় রাখে সাজো।
সে হয়তো এখন কারো বাহুতে পায় নিরাপত্তা,
আর আমি আগলে রাখি তার ফেলে যাওয়া প্রতিটা ব্যথা।
সে ভালো আছে শুনলে, মন ভরে যায় কান্নায়,
ভালোবাসা কি কেবল পাওয়ায়, না হয় আত্মার গাঁথায়?
তুমি ভালো থেকো প্রিয়, সুখে থেকো তুমি দূরে,
আমার ভালোবাসা আজও শুয়ে আছে প্রহরে প্রহরে।
কারো হয়ে গেছো তুমি, অথচ আমি তোমারই থাকি,
ভালোবাসা ফেলে দিলে যে যায় না, সে তো থেকে যায় আঁখি।
এই কবিতা সেই সব ভালোবাসার জন্য, যেগুলো এখন শুধু স্মৃতি, কিন্তু তবুও হৃদয়ের সবচেয়ে পবিত্র জায়গায় যত্ন করে রাখা হয়।
কে পায়, কে হারায়
যে মন থেকে চায়, সে চায় একরাশ ভালোবাসা,
চায় একটু ঠাঁই, একটু মর্যাদা, একটু নির্ভরতা।
সে প্রতিটা দোয়া গড়ে তোলে ভালোবাসার নামে,
তবু ভাগ্য দেয় না তাকে, রেখে দেয় অপূর্ণতায় থামে।
সে চায় গভীর করে, প্রাণ দিয়ে আগলে রাখতে,
হৃদয়ের দরজা খুলে দেয়, নিঃস্ব হয়ে ভালোবাসতে।
কিন্তু যাকে সহজে পেয়ে যায়, সে বোঝে না সে দামে,
ভালোবাসা যে কতটা দামী, তা গলে যায় তার অবহেলার ঘামে।
পাওয়ার মাঝে মর্যাদা নেই, যদি না থাকে তৃষ্ণা,
ভালোবাসা মানে কেবল কাছে আসা নয়, তা এক কঠিন নিষ্ঠা।
যে চায় মন দিয়ে, সে কখনো ভাঙে না আশা,
তবু কেন জানো—পায় না সে, কেবল হারায় ভাষা।
অবহেলা করে যারে, সে জানে না কী হারালো,
কিন্তু যে হারায়, সে জানে—ভালোবাসা কেমন পাথর পালালো।
এমনই নিয়ম এ পৃথিবীর, বড়োই নির্মম খেলা,
কেউ চেয়ে মরে, কেউ হেসে হারে, কেউ ভালোবেসেও হারায় মেলা।
আপনার হৃদয়ের ব্যথা—আমার কলমের দায়িত্ব অবহেলা। ❤️🩹
প্রেম নয়, এবার বিয়ে চাই
বয়স হলো বিয়ের, অথচ প্রেমের প্রস্তাব আসে,
"চলো ঘুরতে যাই!"—এই লাইনটা আজও হাসায় রাশে!
ভালোবাসা? থাক না ভাই, সময় নেই ফালতু টই টই,
বিয়ে করো, সংসার গড়ো—এই তো জীবন যাত্রার মই!
সে এসে বলে—"তোমার চোখে জ্যোৎস্না দেখি হায়,"
আমি বলি—“নোটারি এনেছো? সংসার বাঁধতে চাও তো ভাই?”
আজকাল প্রেম মানেই শুধু কফি আর গল্প জমে,
কিন্তু দায়িত্বের নাম শুনলেই নেটওয়ার্ক বন্ধ থেমে!
শুধু ফুল দিলে চলবে না, চাল-ডাল লাগবে কাঁধে,
ভালোবাসো ঠিকই, কিন্তু পাত্রী চাই সংসারের সাধে!
তাই বলি—প্রেম নয় ভাই, বয়সটা বুঝে চলো,
ভবিষ্যতের ছক আঁকো, শুধু ভাবনায় না ভাসো ভলো।
বড় বানাই যারে
আজ আমি বসে ভেবে দেখি—কে আপন, কে পর,
যাদের চোখে স্বপ্ন এঁকি, তারাই করে তিরস্কার।
আমি যারে বড় বানাই, ঠেলে দিই আকাশ পানে,
তারাই শেষে চায় আমাকে মাটিতে নামিয়ে আনতে।
আমি ছিলাম একখানা ছায়া, রোদে ছুঁয়ে রাখতাম,
তারা ছিল শূন্য, আমি আপন করে ডাকতাম।
ভুল ছিল আমার—ভালোবাসা দিলে সবাই বোঝে না,
যার জন্য জীবন থেমে যায়, সে ফিরে তাকায় না।
ছুটো করে পেছন থেকে, ঠেলে দেয় মুখ থুবড়ে,
আমি ভাঙি, তারা হাসে—ব্যথা জমে বুক কুঁড়ে কুঁড়ে।
আজ বুঝি—সব ভালো থাকা, সব ভালো রাখা নয়,
নিজেকে একটু আগলে রাখাই আসলে সবারে জয়।
রূপ নয়, ভালোবেসেছি মন
রূপ দেখে ভালোবাসিনি—সৌন্দর্য তো ক্ষণিক আলো,
ফুরিয়ে গেলে রং উবে যায়, মনের বন্ধন থাকে কালো।
আমি চেয়েছি চোখের ভাষা, নিঃশব্দে বলা সেই অভিমত,
যা বদলায় না সময়ের সাথে, থাকে চির অটুট, অবিচ্ছেদ সঙ্গত।
চুলের ঢেউয়ে নয় ভালোবাসা, নয় ঠোঁটের গোলাপ হাসি,
ভালোবাসি মন, যেথায় থাকে নির্ভেজাল ভালোবাসার আভাসি।
যার চোখে দেখা যায় স্বপ্ন, কাঁধে যে রাখে ভরসা,
সেই তো আমার, তার সাথেই বাঁধা জীবনের অনন্ত আশা।
তাই যদি রূপ ফুরায় একদিন, হৃদয় রয়ে যাবে পাশে,
ভালোবাসি যাকে আমি, সে থাকবে আমারই আশ্বাসে।
যদি পৃথিবীও রং হারায়, আমি তবু হবো তার,
কারণ ভালোবাসা কখনো দেখে না আয়না—শুধু দেখে হৃদয়ের দ্বার।
ধ্বংসের শেষ প্রান্তে
যেদিন ঘুমের ওষুধ খেয়েও ঘুম এলো না চোখে,
সেদিন বুঝেছি—মন মরে যায় আগুন জ্বলে লোকচোখে।
চুপচাপ বিছানায় পড়ে ছিল শুধু নিঃশ্বাস,
ঘুম নয়, এসেছিল রাতভর কাঁপা কাঁপা নিঃশেষ হাঁস।
চোখদুটো খালি দেখেছে—অন্ধকারও কাঁদে কোনে,
আকাশও নেমে এসেছে মনে—চুপ, কিচ্ছু বলে না টনে।
ওষুধ নয়, প্রিয়র মুখ চাই ছিলো ঘুমের দরজায়,
তার অভাবেই বুঝেছি—ধ্বংস কতটা নীরবতায় গায়।
সেদিন নিজেকেই চিনলাম না—কে আমি, কারো তো নই,
যার জন্য বেঁচে ছিলাম, সে এখন নেই, নাই স্নেহস্নান শৈবাল-তরৈ।
ভালোবাসা ভুলে গেলে হয়তো বাঁচা যায়—ভাবতাম আগে,
আজ জানি—ভালোবাসা মরলে, বেঁচে থাকাও এক বিষ ঢেকে।
—"তোমার অভাবেই আমার বাঁচা।"
ফিরে আনবো না তোমায়
তোমার অভাবে কেঁদেছি রাত, নিঃশব্দে ভিজেছে বালিশ,
জানো না তুমি, আমার জীবন হয়েছে কতটা তালাশ।
ভেবেছিলাম, তুমি ফেরো—হয়তো একদিন… চোখে জল নিয়ে,
কিন্তু আজ বুঝেছি, সে ভাবনাও ছিল একধরনের ক্ষয়ে যাওয়া হিয়ার পিড়ে।
মরে গেলেও তোমায় আজ আর ফিরে আনতে চাই না,
কারণ ভালোবাসা যদি ভেঙে ফেলে, সে পিছুটান সহ্য হয় না।
তুমি ছিলে হৃদয়ের নীড়, অথচ দিলে তাতে শূন্যতা,
আজ আমি বাঁচি, শুধু তাই নয়—আমি গড়ি নতুন পথের দৃঢ়তা।
তোমায় ফিরে আনতে হলে আবার হারাতে হতো নিজেকে,
আবার শিখতে হতো—ভালোবাসলেও সব মেলে না বুকে।
তাই বলি—থাকো তুমি দূরে, যেখানেই হোক, সুখে থেকো,
আমি যে আজ নিজেকে জিতিয়ে নিয়েছি—তোমায় হেরে থেকেও।
রাতের কান্না
প্রতিনিয়ত রাতের কান্নায় ভেজানো বালিশটাই জানে,
কতটা কষ্টের পর নিজেকে ফিরিয়ে আনতে পেরেছি আমি।
যতই ভেঙেছি, যতই জড়িয়েছি গভীর অন্ধকারে,
শেষ পর্যন্ত উঠে দাঁড়িয়েছি, নিঃশব্দে, আত্মবিশ্বাসের সাঁকো পাড়ে।
বালিশের মধ্যে যে জল জমে, সে তো জানে—কীভাবে হতে হয় ধীরে,
জানি না কিভাবে হেসে বেরিয়ে এসেছি, সেদিনের কষ্টের মঞ্চ থেকে।
এটাই ছিল প্রতিশ্রুতি—নিজেকে হারিয়ে না ফেলা,
অভ্যন্তরীণ গহ্বরে, মুখে হাসি রেখেই, নিজেকে ধীরে ধীরে মেলে।
মনে রেখো, যে কান্না ভেজায় বালিকে, সে একদিন রূপান্তরিত হয়,
সেই ভেজা বালিই তোমাকে দিয়ে যায় এক নতুন প্রভাতের চেয়ে বড়ো এক অঙ্গীকার।
এখন আমি জানি—কষ্টের মধ্যে, লুকিয়ে থাকে পরবর্তী প্রভাতের সুখ,
রাতের কান্নায় গড়ে উঠেছে শক্তি, এক জীবনের খোলা বুক।
মৃত মানুষ জীবিত হয় না
ঠকাইছো আমারে—আবার আমার জন্য তুমি কান্না করো,
মৃত মানুষ জীবিত হয় না, প্রিয়, যতই তুমি বায়না ধরো।
আমি ছিলাম তোমার স্বপ্ন—তুমি ছিলে আমার নীরব ভয়,
এখন বুঝি—মৃতের জীবন হয় না, সে তো শুধু স্মৃতিময়।
কেন যে ছিলে আমার জীবনে? আমি কি শুধুই তোমার শখ ছিলাম?
অথবা তুমি কী ভাবতে, আমার প্রতি এই অনুভব ছিল এক ইচ্ছের বাঁধ?
তুমি বায়না ধরো—কিন্তু কি লাভ? আমি তো হারিয়ে গেছি,
হাত পেতে তুমি চাও আমায়, অথচ আমি তো মরে গেছি।
মৃত মানুষের জীবন ফিরিয়ে আনা যায় না কোনো কান্নায়,
কী লাভ সেই অশ্রু দিয়ে, যা কখনো জীবিত করতে পারে না এক ভুলের নাই?
তোমার কান্না শুধুই মাটির গন্ধ, এক বেদনার বায়না,
শুধু স্মৃতি রেখে যায়—তবে আমি আর ফিরবো না, চিরদিন বেঁচে থেকে যায় চুপে চুপে।
ভিতরের পাথর
সময় আর আপন জন যখন একসাথে আঘাত দেয়,
মানুষ তখন বাহির থেকে নয়—ভিতর থেকেই পাথর হয়ে যায়।
যতই হাসি মুখে চলি, যতই মনের জোর করি,
অভ্যন্তরীণ যন্ত্রণায়, মনের মধ্যে ফেটে যায় অগণিত রুদ্রবাণী।
এমন এক আঘাত—যেখানে সময়ও যেন মুচকি হাসে,
আর তার প্রিয়জনেরই হাতে তাকে ধীরে ধীরে মরে যেতে দেখে।
তবে বাহ্যিক দেহে কিছুই পরিবর্তন হয় না,
অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণে মানুষের আত্মা শুধু নিঃশেষ হয়ে যায়।
এখন আমি পাথর, কখনো একটুও কাঁদি না,
যতটা ভাঙা, ততটাই শক্ত, তবে কখনো ফের জীবন্ত হতে চাই না।
আঘাতের ঝাঁকির পর, আর বাঁচার কোনো পথও নেই,
তবে ভিতর থেকে পাথর হয়ে, জীবনের বোঝা বইতে থাকা প্রয়োজন।
আল্লাহ ছাড়া কেউ পূর্ণ নয়
একমাত্র আল্লাহ ছাড়া—আপনি যাকে গভীর ভালোবাসবেন,
সে আপনার অন্তরের তত গভীরেই আঘাত দিবে, আপনি জানবেন।
মানুষের ভালোবাসায় থাকে এক অন্ধকার প্রলেপ,
যতটা বিশ্বাস করবেন, ততটাই ভাঙবে, আসবে বেদনা-দ্বিধা, তীব্রতম ছোঁয়া।
তবে আল্লাহর ভালোবাসা—সে থাকে এক সঙ্গীস্বরূপ,
সর্বোচ্চ, অটুট, অমলিন—যে কখনো আপনারে হারাবে না, আঁকড়ে থাকবে চিরকাল।
মানুষকে ভালোবাসা শিখুন, তবে সীমা রেখেই—
কারণ তারা তো মাটির সৃষ্টি, মানবিক দুর্বলতা, যাদের একদিন সায়ু দেবে স্বপ্ন থেকে দূরে।
এখানে একমাত্র আল্লাহই, যিনি রাখবেন আপনাকে সুরক্ষিত,
বাকি সবকিছু মাটির মতো—আঘাতেও থাকবে নীরব, তবু রক্ত ঝরবে, চুপ চুপ।
তাহলে, আল্লাহকে চিরকাল ভালোবাসুন, মানুষকে সীমিত রেখেই—
এটাই হলো জীবনের সবচেয়ে সুন্দর, সবচেয়ে সঠিক পথের দিশা, শর্তহীন।
বিশ্বাসের আশ্রয়
মানুষ তাকেই আঁকড়ে ধরে বাঁচতে চায়,
যার কাছে সে বিশ্বাস, যত্ন, সম্মান আর মানসিক শান্তি পায়।
এ পৃথিবীর যত বড়ো শক্তি—তাদের কাছে সব কিছু আসে,
কিন্তু একমাত্র মনই চায়—প্রেমে যত্ন, তার অটুট আঁচলে।
বিশ্বাসে সুর থাকে, সেই সুরে পূর্ণতা পায় জীবন,
যেখানে কিছু নেই লুকানো, সবই খোলামেলা, শান্তির সমন্বয়।
আর যত্নে ভালোবাসা, তা এক গভীর শক্তি,
যত্নের আলিঙ্গন ছাড়া মানুষ কখনো বাঁচতে পারে না, মেঘের মতো ভাসে।
সম্মানই সেরা রত্ন, যা মেলে না সব মানুষের কাছে,
তবে যারা দেয়—তাদেরই ভালোবাসা থাকে প্রগাঢ়, অমলিন সবার মাঝে।
এমন সম্পর্কের শুদ্ধতায়, মনের শান্তি ফিরে আসে,
এটাই তো জীবন—মানবিক যোগাযোগের সবচেয়ে বড়ো মন্ত্র, সঠিক দিশা যা বাসে।
ভুলে থাকতে পারছি না
কি যে সুখে আছি—আহ্, না পারছি ভুলে থাকতে,
না পারতেছি সুখে থাকতে, ভেতর থেকে কিছু যেন দগ্ধ করতে।
সুখের রঙে মাখা মেঘের মতো, যেন আমি হারিয়ে যাই,
তবে আবার ফিরে আসি, উথাল-পাথাল এই হৃদয়ে, কাঁদতে কাঁদতে আবার লড়াই।
এ সুখ কি আসল, নাকি অস্থিরতা?
সুখে থাকতে চাই—তবে কেন মনে হয়, কিছু একটা ভুল?
অথচ, স্মৃতি তো ফিরে আসে, তাড়িয়ে দেয় বুকের ভেতর,
মনে মনে নিজেকেই প্রশ্ন করি—কী ছিল সত্য, আর কী ছিল স্বপ্নের সিঁড়ি?
এ জীবন যেন এক ধোঁয়াশা, সুখের মাঝে চাপা দুঃখ,
ভুলে যেতে চাই, তবে কিছু কিছু রেশ যায় না—থাকে ঘুরে ফিরে শূন্য।
তবুও জানি—এই দুঃখ না থাকলে, সুখও পূর্ণতা পাবে না,
এ এক অভ্যন্তরীণ যুদ্ধ—ভুলে থাকতে পারছি না, সুখে থাকার সুখও ফিরিয়ে নেয় না।
মন খারাপের কারণ
মন খারাপের কারণ সব সময় প্রেম ভালোবাসা হয় না,
এটা তো কোনো এক অজানা শূন্যতা, যা আর কখনো পূর্ণ হয় না।
এটা তো জীবনের এক অব্যক্ত কষ্ট, যা মনের ভেতর খেলে,
এটা তো এক নিরব যন্ত্রণা, যা কখনো গায় না গান, শুধুই ছলকে চলে।
ভালোবাসা না পেলেও—মন তো কিছুটা শান্তি খুঁজে,
তবে জীবনের নানা দিক—চলতে চলতে একে একে ফিকে হয়ে যায়, রূপ বদলে।
অথচ মনে হয়—বিষণ্নতা আসলে আসলে কোথা থেকে আসে?
এ কি শুধু এক মুহূর্তের ব্যথা, নাকি হারানোর ভয়, সবার কাছে ফিরতে না পারার আশা?
প্রেম তো জীবন এক পাত্রে, কিন্তু মন খারাপের মঞ্চে,
যতটা হারানো, ততটাই গেঁথে থাকে অন্তরে, এক অদৃশ্য শূন্যতায়।
এমন কোনো কারণ নেই—শুধু ছায়ার মতো সে বেঁচে থাকে,
এটা তো কিছু না পাওয়া, অশান্তি, যা হৃদয়ের মাঝেই আশ্রয় নেয়।
হারিয়ে যেতে চাই
এমন ভাবে হারিয়ে যেতে চাই—ছন্নছাড়া হয়ে,
খুঁজলেও যেন কেউ না পায়, আমার খোঁজ, আমার ছায়া তো নেই।
জীবনের স্রোতে আমি এক নিঃস্ব ছায়া,
যেখানে আমার সুর নেই, আমার আলোও নেই।
কেউ কখনো খুঁজবে না—তাও জানি,
যতই ছুটে চলুক, আমি থাকব না সেখানে, তবুও অদৃশ্য থেকে যাব।
এই নিঃসঙ্গতা যেন এক শান্ত সঙ্গী,
যেখানে কোনো শব্দ নেই, আর আঘাতও পৌঁছায় না।
হঠাৎ করে হারিয়ে যেতে চাই, যেন কেউ না জানে,
কোথায়, কিভাবে, কখন—মনে রয়ে গেলো শুধু এক লুকানো আঘাত।
এমন এক জীবন, যেখানে শুধু ছন্নছাড়া ভাবনা,
কিন্তু জানি—মনের ভেতর এই অনুভূতি কেউ কখনো বুঝবে না।
লজ্জিত আমি
তবে আমি নিজের কাছে খুবই লজ্জিত,
এক সমুদ্র ভালোবাসার পরও, তোমাকে নিজের করে রাখতে পারিনি।
সেই ভালোবাসা, যে ছিল অশেষ,
কেন জানি, তা হারিয়ে গেলো—অদৃশ্য হয়ে, যেন বাতাসে মিলিয়ে গিয়েছে।
তোমার পাশে ছিলাম, কিন্তু পারলাম না তোমার হৃদয়ে পৌঁছাতে,
ভালোবাসা ছিল ভরা—তবে কোথাও যেন অভাব ছিল, ফাঁকা।
আমি তোমাকে নিজে করতে চেয়েছিলাম সবার আগে,
কিন্তু জানি না কেন, সবকিছু বেসামাল হয়ে গেলো, প্রেম মুছে গেলো সপ্নের মতো।
তোমাকে এত ভালোবাসার পরও—এমন কষ্ট কেন পাই,
নিজের কাছে কেন এত লজ্জিত, কেন হৃদয় ফাঁকা, ভালোবাসা কখনো পুরো হয় না।
এক সমুদ্র ভালোবাসা ছিল, তবুও তোমাকে ধরে রাখতে পারিনি,
এখন সেই ভালোবাসা যেন কাঁপছে, মনে এক অব্যক্ত শূন্যতা ছড়িয়ে আছে।
অসহায় ভালোবাসা
তারপর দেখলাম—সে বেশ ভালোই আছে আমাকে ছাড়া,
অথচ আমি—ভালো থাকতে পারলাম না, হারিয়ে গেলাম সবার মাঝে।
তার হাসি, তার চোখে সুখের চমক,
আর আমি—একটা ছিন্ন তোরণ, যেখানে প্রিয়তা কাঁপে, শূন্যতা ডুবে থাকে।
সে তো চলে গেছে, নতুন সূর্য উঠেছে তার জীবনে,
আর আমি—তুলনাহীন একটা রাত, যেন তার ছায়া ছাড়া।
তবে জানি, তার ভালো থাকা কোনো দায় নয়,
কিন্তু আমার না থাকার অনুভূতি—কোনো পরিণতি পেল না।
একদিন সে যখন হাসছে, জানি সে ভালো—বিনা প্রশ্নে,
আর আমি—ভালো থাকার চেষ্টা করেও খুঁজে পাই না শান্তি, বেঁচে থাকার শক্তি।
তার খোঁজে আমি ছিলাম—তবে সে তো তার পথেই, চলে গেলো,
আর আমি—দুঃখের অতলে, হারিয়ে গেলাম, কখনো নিজের গন্তব্যে ফিরে এলাম না।
তবুও মনে রেখো—তোমার ভালো থাকা থেকে বড় কিছু চেয়েছিলাম,
কিন্তু এখন—বাকি সময়, আর কিছুই নয়, শুধু এক অসমাপ্ত গল্প।
তোমার সুখে আমি নষ্ট হয়ে যাব—তবুও জানি,
তোমার ভালো থাকাই হবে আমার শেষ শান্তি, এত ভালোবাসা কখনো পূর্ণ হয় না।
একটা আফসোস
একটা আফসোস—কি জানো তুমি?
এতো দিনেও তুমি আমাকে চিনতে পারো নাই,
যতই দেখিয়ে দিলাম, যতই আশা রাখলাম,
তবুও কেন, আমি রয়ে গেলাম অজানা—তোমার কাছে আমার অস্তিত্ব কি রয়ে গেলো খালি?
ভালোবাসার মধ্যে যতটা ছিলাম,
ততটাই হারিয়ে গেলাম, যেন অজানা পথের ধুলো।
তুমি তো বুঝলে না—আমার হৃদয়ের কাহিনী,
এতো ভালোবাসা থাকা সত্ত্বেও—কেন তুমি সেই দৃষ্টি দিলেনা, জানি না।
আমার আত্মাকে খুঁজে পেয়েছিলাম তোমার চোখে,
তবুও তুমি বুঝতে পারলে না—আমি ছিলাম তোমার একান্তই।
আর এখন, এ আফসোস—এমন কিছু, যা কখনো শেষ হবে না,
যতই কষ্ট হোক, তুমি যে আমাকে চিনতে পারো নাই, সেটা ভুলবো না।
অটুট ভালোবাসা
যত দিন বেঁচে আছি, বিন্দু পরিমাণও ভালোবাসা কমবে না,
তোমার প্রতি, এই হৃদয়ে তা কখনো কমবে না।
কত কষ্টই হোক, যতই দূরে থাকো তুমি,
তবে জানো—আমি তোমাকে ভালোবাসব, না থামিয়ে, চিরকাল।
তোমার সব অগোচরে—আমার ভালোবাসা হারায় না,
যতই সময় চলে যায়, একে একে সব কিছু ফিকে হয়,
তবে জানি—তুমি থাকো আমার হৃদয়ের ভেতরে,
তুমি ছাড়া আর কিছু চাওয়া হবে না, এই ভালোবাসা থাকবে অটুট, অবিচল।
এতো দিনের মাঝে, যত দূরত্বই থাকুক,
এ ভালোবাসা কখনো কমবে না, এক বিন্দুও।
কষ্ট, ক্ষত, অথবা অজানা পথ—আমার ভালোবাসা তোমার জন্য,
তোমাকে ছাড়া কেউ কখনো হবে না, আর কিছু পাবো না—এটাই আমার চাওয়া।
মায়া লাগিয়ে চলে যাওয়া
(অক্ষরবৃত্ত ছন্দে)
মায়া লাগিয়ে চলে যাওয়া—যে মানুষটা একদিন ছিল,
সে কি বুঝবে—মামা কাটানো, কতটা ভয়ংকর ভয়াবহ দুঃখের চিহ্ন।
যখন তুমি থাকত, ছিল অশান্তি, ছিল স্বপ্নের আলো,
কিন্তু চলে যাওয়ার পর, সেই অন্ধকারে আমি একা—শূন্যতার কাঁধে সবটুকু বোঝা।
সে জানে না—কেমন করে শরীর বেঁচে থাকে, মন চলে যায়,
কেমন করে এই মায়ার ঘূর্ণিতে ভেসে গিয়ে, আমি যেন মৃত এক জীবন্ত।
কীভাবে হবে তার বোঝানো, কত কষ্টে কাটছে দিন,
যখন মায়ায় বাঁধা ছিল, এখন সেই বাঁধনই রক্তাক্ত স্মৃতি হয়ে বিঁধে থাকে।
একদিন সে বুঝবে না, একদিন সে অনুভব করবে না,
কখনো জানবে না—তাকে ভুলে বাঁচা, কিন্তু জানি না কখন, কিভাবে।
তোমার চলে যাওয়া, অদৃশ্য হয়ে যাওয়াই যে সবচেয়ে বড় আঘাত,
মায়ার পরিণতিতে—শুধু ভয়ঙ্কর এক কষ্ট, যা চিরকাল থাকবে হৃদয়ের ভিতরে।
উপলব্ধি:
এই কবিতায় উঠে এসেছে সেই কষ্টের কথা, যখন কোনো মানুষ চলে যায়, কিন্তু তার চলে যাওয়ার পর এক অগাধ শূন্যতা এবং যন্ত্রণার ছাপ পড়ে থাকে। মায়ার সাথে চলে যাওয়া যে কতোটা ভয়াবহ, তা বোঝানো যায় না—এটা যেন এক অদৃশ্য ক্ষত, যা সময়ের সাথে ক্রমশ গভীর হয়।
একলা থাকার যোগ্যতা
(অক্ষরবৃত্ত ছন্দে)
অবশেষে আমি ধীরে ধীরে মেনে নিচ্ছি,
আমি কারো যোগ্য না—এটাই যেন আমার নিয়তি।
যতদিন বেঁচেছি, খুঁজে দেখেছি কোনো প্রেম,
তবে জানলাম—আমি তো একা থাকার যোগ্য।
তোমাদের কাছে ছিলাম আমি এক স্বপ্ন,
কিন্তু এখন—নিজেই এক নিরব ঘর।
এতো ভালোবাসা ছিল, তবুও কিছু হলো না,
বুঝলাম—আমি তো একা থাকার যোগ্য, আমার কষ্টই এখন সঙ্গী।
সবার মাঝে, এ যেন এক অদৃশ্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা,
যেখানে আমি হারিয়ে গেলাম, নিজের মাঝে।
নিজেকে ভালোবাসার চেষ্টায়, এখন সবার কাছে আমি অপ্রয়োজনীয়,
তবুও—এটা বুঝতে শিখেছি, একা থাকার যোগ্যতা আমারই সঙ্গী।
তবে জানি—এটা শুধুই এক অভ্যস্ততা,
একদিন, একসময়—শক্তি পাবো ফিরে নিজেকে ভালোবাসতে।
তবে আজ, একে একে, মন মেনে নিচ্ছে এই বাস্তবতা,
যে আমি কারো যোগ্য না—এবং একা থাকার যোগ্য, এই মন তো স্বীকার করে।
উপলব্ধি:
এই কবিতায় তুলে ধরেছি সেই অনুভূতিকে, যেখানে একজন মানুষ তার নিজের আত্মসম্মান এবং পরিচয়ের সন্ধানে থাকে, কিন্তু সে একসময় উপলব্ধি করে যে সে একা থাকার যোগ্য। এটা এক অপ্রত্যাশিত অভ্যস্ততা, কিন্তু সেই অভ্যস্ততার মধ্যে একটি দৃঢ়তা এবং আত্মসম্মানও নিহিত থাকে।
জুমার নূর
জুমার নূরে ভরে যাক হৃদয়,
দরুদের সুবাস ছড়াক চারপাশে, শান্তি ছড়িয়ে যাক।
প্রার্থনায় ডুবে যাক প্রভু প্রেমের আলো,
তোমার রাহমতের ছায়ায় মুছে যাক দুঃখের আঘাত।
যতক্ষণ এ দিনে সূর্য অস্ত যাবে,
আমাদের অন্তর যেন পবিত্র হয়ে ওঠে,
দরুদে মিশে যাক প্রীতি আর প্রভুর নামে,
বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে যাক আশীর্বাদ আর শান্তির স্রোত।
নূরের আভায় যেন মিটে যায় সব হাহাকার,
প্রার্থনায় যেন পাওয়া যায় পরম শান্তি,
এই জুমার দিনে—হৃদয়ে প্রেমের বার্তা,
প্রভু, দয়া করে তোমার করুণার আলো দাও।
উপলব্ধি:
এই কবিতায় উঠে এসেছে জুমার দিনের পবিত্রতা, যেখানে দরুদ এবং প্রার্থনার মাধ্যমে শান্তি ও ভালোবাসা ছড়িয়ে পড়ে চারপাশে। এতে হৃদয়ের প্রশান্তি এবং আল্লাহর করুণা ও নূরের প্রতি গভীর ভালোবাসা ও বিশ্বাস প্রকাশিত হয়েছে।
শূন্যতার অনুভূতি
আমার শূন্যতা—একদিন তুমি অনুভব করবে,
তবে এখন সময়ের অপেক্ষা, শুধু তুমি বুঝবে না।
যতই দূরে থাকো তুমি, যতই দিন চলে যাক,
একদিন আমার অভাব, তোমার হৃদয়ে স্পষ্ট হবে, জানো না!
এখন তুমি হেঁটে যাও—নিজের পথে,
তবে জানো—আমি একদিন তোমার সঙ্গী ছিলাম,
যতই সময় পার হোক, সেই শূন্যতা রয়ে যাবে,
আমার ভালোবাসার খোঁজ তুমি পাবো, যখন নিজেকে খুঁজে পাবে।
তুমি বুঝবে না এখন—কীভাবে কষ্টে কাটছে দিন,
কিন্তু সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে, তুমি অনুভব করবে এই শূন্যতা,
শুধু অপেক্ষা—আর কিছু নয়,
একদিন তুমি বুঝবে, আমার অভাবের ব্যথা তোমাকেই তাড়া করবে।
"আবেগের অন্ত্যযাত্রা"
চোখে যে জল ছিল স্নিগ্ধ বৃষ্টি,
সেই আজ শুকনো — নিঃশব্দ দৃষ্টি।
কান্নারও ভাষা এখন নীরব,
ভালোবাসা নিভে গেছে নির্বাক ধীরভাবে রব।
মানুষ এখন যন্ত্রের মতো,
মুখে হাসি, ভিতর ফাঁকা কত!
মন থেকে মন ছুঁতে চায় না কেউ,
সবাই ব্যস্ত, কারো হাতে নেই ক’টি ঢেউ।
আকাশও আজ গম্ভীর বিষণ্ণ,
সূর্যও যেন হাসে অনিচ্ছাসত্ত্বে রুদ্ধ।
বাতাসে নেই ভালোবাসার ঘ্রাণ,
স্মৃতিগুলো পড়ে থাকে — ধূলিমলিন প্রাণ।
আগে যেখানে মন ছিলো খুলে,
আজ সেখানে তালা পড়া ভুলে।
কে কার কথা ভাবে বলো আজ?
স্বার্থে বাঁধা প্রতিটি সম্পর্কের সাজ।
তবু কোথাও হয়তো জেগে আছে আশা,
একটি হৃদয়ে — নীরবে ভালোবাসা।
যদি ফিরে আসে সেই দিন একদিন,
যখন মানুষ হবে মানুষ — অন্তরছোঁয়া বিনিময়-রিন।
"ভালোবাসার বাকি গল্প"
ভালোবাসা ছিলো একদিন ছায়ার মতো,
পাশে থাকত, ছুঁয়ে যেত মন যত।
আজ তা শুধু ছবি, কিছু স্মৃতি,
বেঁচে আছে কাগজে লেখা অশ্রুজলপুঁতি।
হাতে হাত রাখা ছিল সহজ গল্প,
এখন সম্পর্ক মানে নিঃশব্দ সম্বল।
ভালোবাসা গুনতে হয় বার্তায়,
কতবার লেখা হলো "আছো?" — শুধুই দায়।
চোখে চোখ রাখার ছিলো এক ভাষা,
এখন দৃষ্টি কেবল ঠেকায় আশা।
চাঁদের আলোয় যেখানে ছিলো প্রতীক্ষার গান,
আজ সেখানে আঁধার, নীরবতাই প্রাণ।
সেই তো মানুষ, আজও বাঁচে,
তবুও হৃদয়ে না থাকে, না আঁচে।
পড়ে থাকা কথার ভেতর, অর্ধেক চিঠি,
অবহেলায় লেখা কিছু অসমাপ্ত স্মৃতি।
তবুও জানি — কোনো এক দিন,
ফিরে আসবে আবেগ, ফিরবে মধুর গীতধ্বনি।
আবার বৃষ্টি হবে, ছুঁয়ে যাবে প্রাণ,
তখন মানুষ খুঁজবে মানুষকেই, অবিচল প্রাণে জ্ঞান।
"নীরবতার মানুষ"
ভিড়ে মিশে থাকা শত মুখের মাঝে,
একটি মুখ খুঁজে ফেরে হৃদয় যে আজও বাজে।
সবাই কথা বলে, কেউ শোনে না কানে,
ভালোবাসা মরে যায় শীতলতার টানে।
কোথাও ছিলো একদিন শীতল ছায়াতরু,
সেইখানে হেসেছিলো দু'টি প্রাণ নির্ভরভরু।
আজ সে গাছ নেই, কাটা শিকড়,
মন হয়ে গেছে কেবল অনুভূতিহীন পাথর।
তবুও মাঝে মাঝে একা রাতে,
হৃদয় কাঁদে — কারো নাম না জানতে।
চুপচাপ দেয়ালে ঝোলে স্মৃতির ছায়া,
জীবন হয়ে যায় শুধুই হাহাকার-আকাশমায়া।
মানুষ মানুষকে দেখে — চেনেনা কেউ,
কোথায় গেলো সেই চাওয়া-পাওয়ার ঢেউ?
একেকটা সম্পর্ক, এখন শুধুই সাজ,
ভালোবাসা যেন এক পুরনো নাটকের মহড়ার মাজ।
তবু কেউ একজন এখনো স্বপ্ন দেখে,
যে দিন আসবে — মানুষ কথা রাখবে দেখে।
আবেগ ফিরবে, অনুভব হবে গান,
হৃদয় বলবে, "তুমি ছিলে — এটাই তো প্রাণ!"
"সাদ আছে,সাধ্য নেই"
আমার সাদ আছে ঠিকই, কিন্তু সাধ্য যে নেই,
রঙিন আকাশ দেখি, তবুও মন কাঁদে মেঘছায়ায় প্রহরে।
সব কিছু পাই, তবুও কোথায় যেন শূন্যতা,
চোখ ভরে জল, তবুও থাকে না পূর্ণতা।
হাসি আছে ঠোঁটে, নয়নে নেই আলো,
প্রতিটি দিন কাটে যেন অভ্যস্ত এক ছাঁদে ঢলো।
প্রেম আসে, যায় — ছায়ার মতোই চলে,
কেউ আর দাঁড়ায় না, ব্যথার কথা বলে।
বন্ধুরাও আছে, পাশে — কেবল শরীরে,
মন যে পড়ে থাকে, একা ব্যথার ঘরবন্দী গহীনে।
আবেগের কথা বলি — কেমন যেন বোঝে না কেউ,
মনে হয়, আমি ছাড়া সবাই ভালো আছে ঢেউঢেউ।
স্বাদ ছিলো কখনো, সেই ছোট ছোট স্মৃতিতে,
মায়ের হাতের ভাত, শিশির ভেজা পাটের চিতায়।
আজ বড় হয়ে বুঝি — কেবল সাদ, নিয়ম, রীতি,
কিন্তু হৃদয়ের ভাষা হারায় সমাজের অনুচিত নীতিতে।
তবুও আমি খুঁজি, সেই পুরনো সরলতা,
যেখানে “ভালো আছি” মানে সত্যিকারের ভালো থাকা।
যেখানে মন মানে এখনো ধ্রুবতারার গান,
আবেগ মানেই জীবন — ভালোবাসার প্রাণ।
"অনুভূতির মায়া"
অনুভূতি এমন এক সূক্ষ্ম কণা,
জমতে জমতে গড়ে তোলে মায়ার সোনা।
একটুখানি হাসি, একটুখানি চোখে চাওয়া,
তারই মাঝে জন্ম নেয় হৃদয়ের চাওয়া-পাওয়া।
প্রতিদিন একটু একটু ভালো লাগা,
হঠাৎ কারো অপেক্ষায় সময় থমকে থাকা।
সেই ভালো লাগাই রূপ নেয় প্রেমে,
নীরব স্বরে বলে, “তোমায় চাই — হৃদয়ের ঋণে।”
মায়া গড়ে ওঠে শব্দহীন কথায়,
চোখে চোখে খেলা চলে অনুভবের পাতায়।
না বলা সব ভাষা, কণ্ঠহীন গান,
তবুও হৃদয়ে বাজে তার মধুর সুরে প্রাণ।
ভালোবাসা মানে তো একটা চেতনা,
যা বলে না কিছু, তবুও বোঝায় কত কথা!
জমে থাকা অনুভব, একদিন ফোটে ফুল হয়ে,
সেই ফুলেই মিশে যায় জীবন — সুখে ও দুঃখে।
কিন্তু আজকাল সেই অনুভব আর জন্মায় না,
ভালো লাগা আসে, যায় — মায়া গড়তে চায় না।
ভালোবাসা এখন এক কথার খেলা,
আছে শুধু শব্দ, নেই অনুভবের মেলা।
তবুও কেউ কেউ এখনো বাঁচে ওই আশায়,
যে অনুভূতি জমে একদিন মায়ার সৃষ্টি হাসায়।
আর সেই মায়া রাঙায় ভালোবাসার ছবি,
যেখানে হৃদয় থাকে — অনুভবের থাবি।
"কে-ই বা দেখে?"
রাতভর জেগে আছি, ঘুম নেই চোখে,
চাঁদও বোঝে না — এ হৃদয় ভেজে নীরব শোকে।
আকাশটা চেয়ে থাকে, তবুও অবাক,
এইসব অনুভূতি আজ কাকে রাখে চেনা হিশেবের খাতায়?
একলা জানালার পাশে বসে থাকা স্বপ্ন,
শুধুই হাওয়ার মতো — ছুঁয়ে যায়, রেখে যায় জ্বালা নিরন্তর।
মন চায় বলি — “আছি তো”,
কিন্তু কানে দেয় না কেউ, সবাই ব্যস্ত নিজের মতো।
চোখের নিচে কালি জমে রাতের ছায়া,
হৃদয়ে জমে থাকে অব্যক্ত ব্যথার মায়া।
যার জন্য জাগা — সে জানে না তো,
তার দিকেই তাকিয়ে থাকে নিঃশব্দ প্রহর যত।
এইসব অনুভূতি কে-ই বা দেখে?
ভালোবাসার ভাষা আজ যেন বোকা নির্বাকের লেখে।
কে বোঝে জেগে থাকা একেকটা নিশীথ,
যেখানে ঘুম নয় — ভালোবাসারই অভিশাপ কিশোর-চিত।
তবুও লিখে যাই, এই হৃদয়ের ভাষা,
যদি কেউ পড়ে, বুঝে ফেলে নীরব প্রেমের আশা।
যদি একদিন প্রশ্ন করে — “ঘুমাওনি কেন?”
তবেই বুঝি এই জেগে থাকা হয়ে উঠবে আপনজনের ধন।
"ক্ষমার ভালোবাসা"
যদি ক্ষমা করতে না পারো হৃদয় উজাড় করে,
তবে ভালোবেসো না — থেকো দূরে, নিরব সীমানার চরে।
ভালোবাসা মানেই তো দুঃখে পাশে থাকা,
ত্রুটি মেনে নিয়ে, হৃদয়ে আলো জ্বালানো আঁধার রাখাও।
ভুল হবে, পথ হারাবে, বলবে না সব ঠিক,
তবুও হাত না ছেড়ে বলা — "আমি আছি, অটুট এক দিক।"
ক্ষমা হলো সেই সূর্য, যা রাগের রাত পেরিয়ে,
ভোর এনে দেয় ভালোবাসার ছায়ায় শীতল প্রেমে ভরিয়ে।
ভালোবাসা যদি হয় কেবল মুগ্ধতার মঞ্চ,
তবে প্রথম ভুলেই শেষ হবে তার ধ্বংসের কঞ্চ।
যদি গুছিয়ে না নিতে পারো ভাঙা মুহূর্ত,
তবে কেন আঁকো প্রেমের ছবি — এই প্রশ্নটিই সত্যর্ত।
ক্ষমা মানে হার নয়, বরং হৃদয়ের শক্তি,
যেখানে ভালোবাসা পায় নির্ভরতার দীক্ষা-বক্তি।
তাই বলি — আগে শিখো কীভাবে ক্ষমা করে,
তারপর ভালোবেসো কাউকে — অন্তরের দরজাটুকু খোলে।
না হলে সম্পর্ক হয় জ্বালাময় এক কাঁটা,
ভালোবাসা হয় বোঝা — আর হৃদয় কাঁদে চুপচাপ রাতের প্রহর গাঁথা।
তাই ভালোবাসার আগে, ক্ষমা করো নিঃস্বার্থে,
তবেই তুমি পাবে প্রেম — চিরস্থায়ী এক সত্যরথে।
"মারা যাচ্ছে আবেগ"
দিন দিন সব কিছু যেন কেমন হয়ে যায়,
চেনা মুখ অচেনা হয়, কথাগুলো থমকে দাঁড়ায়।
হাসি থাকে ঠোঁটে, মন পড়ে থাকে দূরে,
আবেগগুলো মরে যায় — নিঃশব্দ এক ঘূর্ণিপাকে ঘুরে।
মুখে মুখে ভালোবাসা, চোখে নেই উত্তাপ,
কথার ভেতর শূন্যতা, অনুভব নেই আপন ভাব।
ছুঁয়ে যায় না মন আর, ছুঁয়ে যায় কেবল চামড়া,
হৃদয়ের ভাষা গুমরে মরে — কে-ই বা বোঝে তা যে আঁধারা?
বন্ধুরা এখন আর বন্ধু নয়,
সুবিধার পাশে দাঁড়ায়, বিপদে করে পরাজয়।
ভালোবাসা আজ লেনদেন, কৃত্রিম এক তল,
যেখানে সত্য হারায় — পড়ে থাকে ধুলোবালির জল।
আবেগ অনুভূতির মৃত্যু হচ্ছে নীরবে,
কেউ কাঁদে না আর — হৃদয় আজ অচল, ভারে ভারে।
তবুও কোথাও হয়তো, কারো মনে একটুখানি আলো,
যে এখনো ভালোবাসতে চায় — নিঃস্বার্থ, নিঃশব্দ ভালো।
এই কবিতা নয় শুধু বিলাপ —
এ এক ডাক, ফিরে আসার প্রণবস্বপ্নে প্রতিফলিত চাপ।
আবেগের মৃত্যু রোধ করো, মানবিকতা ফিরিয়ে আনো,
হৃদয়ের শব্দ শুনো — ভালোবাসার দ্বার আবার খোলাও।
"ভালোবাসার মূল্য"
আমাদের এই ছোট্ট জীবন—
মুহূর্তে মুহূর্তে হারায়, সময় যেন এক চলমান বৃন্তবিহীন পত্রবন।
এমন ক্ষণস্থায়ী ছায়ায়,
ভালোবাসার মূল্য না দিলে, হৃদয় তো শূন্যতায় ঠায়।
ভালোবাসা মানেই সময় দেওয়া,
একটু বোঝা, একটু থাকা, নিঃশর্ত পাশে বসা।
কিন্তু আমরা দিই কাজ, ব্যস্ততা, ভুলে যাই যে
ভালোবাসা চায় না উপহার—চায় হৃদয়ের প্রগাঢ় শ্রদ্ধা।
কেউ যখন “কেমন আছো?” বলে,
সেই ছোট্ট প্রশ্নে লুকায় অগণিত আবেগের গলে।
একটি হাত বাড়িয়ে দিলে, ভেঙে যায় একাকীত্ব,
কিন্তু আমরা ব্যস্ত—ভালোবাসা ভুলে, গড়ি কৃত্রিম নিয়ত।
এই ছোট্ট জীবন এতটাও দীর্ঘ নয়,
যে অপচয় করবো রাগে, অহংকারে—ভালোবাসাকে অস্বীকার করবো কষ্টনয়।
একদিন সবাই চলে যায়,
থাকে না কেউ—শুধু থেকে যায় না-বলা কিছু কথা আর নিঃশ্বাসহীন ছায়া।
তাই বলি—ভালোবাসো, যত্নে রেখো,
যদি কাঁদাও কেউ, জেনো—তুমি তার জগৎটাই ভেঙে ফেলো।
ভালোবাসার মূল্য বোঝো, যতদিন আছে সময়,
তবে এই ছোট্ট জীবন হবে সত্যি—একটা বর্ণময় পরিপূর্ণ স্বর্গস্বরূপ ভূমি-ময়।
"আমাদের এই ছোট জীবনে ভালোবাসার মূল্যায়ন করা উচিৎ।"
আমাদের এই ছোট জীবনে ভালোবাসার মূল্যায়ন করা উচিৎ,
যেমন অন্ধকার রাতে একখানি চাঁদ,
যে চুপিচুপি আলো ছড়িয়ে যায়,
অন্যের দুঃখের কাছে দাঁড়িয়ে থাকে,
তবুও সবাই দেখতে পায় না তাকে।
ভালোবাসা, যে গোপন সুরে বাঁধে জীবন,
যে অনুচ্চারিত শব্দে উঁকি দেয় অন্তরের মাঝে,
যার রূপরেখা শুধু চোখে দেখা যায়,
কিন্তু ভাষায় ব্যাখ্যা করা যায় না।
এ যেন এক রহস্যময় পংক্তি,
যে হৃদয়ে বসে, নিরব থেকে যায়।
বাহিরে খেলা করে হাওয়া, ভিতরে,
একটি নিঃশব্দ রাগ, এক অনুরাগের দহন,
যে পুড়তে পুড়তে এক সময় নিঃশেষ হয়,
এখনো তার গন্ধ বাতাসে লেগে থাকে,
একদিন পলকে বুঝে, যে আমাদেরই ছিলো এ পথ।
তবে, এই অনুভূতিগুলো কখনো উচ্চারণ পায় না,
কারণ কিভাবে বলি, যখন ভাষা অক্ষম,
এই ছোট জীবনে ভালোবাসা খোঁজা,
একটি অদৃশ্য সড়ক, যে হারিয়ে যায়
যতক্ষণ না আমরা জানি, তার আসল মূল্য।
সবাই জানে, কিন্তু কেউ বলে না,
ভালোবাসার গোপন কাহিনী,
যা গাথা হয়ে থাকে হৃদয়ের গোপন শেলের মাঝে,
চোখের অশ্রু, মনে মেঘ,
তবুও গুছিয়ে কথা বলা যায় না।
তুমি কি জানো, যে ভালোবাসা নেই,
সে এক নিঃসঙ্গ বনের মধ্যে হারানো পাখি,
যে আর কোনোদিন ফিরবে না তার নিজ সুরে,
কিন্তু হৃদয় জুড়ে রয়ে যাবে তার অদৃশ্য ছায়া।
এমন প্রেমই তো পৃথিবীকে ঘিরে রেখেছে,
চোখের পলকে ক্ষণস্থায়ী, কিন্তু অবিরাম।
"কিছু কিছু মানুষের চেহারায় প্রেম থাকলেও হৃদয়ে এর ছিটেফোঁটাও থাকে না।"
কিছু কিছু মানুষের চেহারায় প্রেম থাকলেও হৃদয়ে এর ছিটেফোঁটাও থাকে না,
তাদের চোখে অদ্ভুত এক মায়ার ঝিলিক,
যে মায়া এক পলকে ভালোবাসার মতো মনে হয়,
কিন্তু হৃদয়ে এক টুকরো শূন্যতার আড়ালে,
অথবা একটি মিথ্যা হাসির আড়ালে,
থাকে শূন্যতা, আঘাত, বিভ্রম—এমন এক অদৃশ্য খেলা।
চেহারা তাদের উজ্জ্বল, যেন সূর্যের কিরণ,
যে সূর্য কখনোই পৃথিবী ছোঁয়ার চেষ্টা করে না,
অথবা এক লাল নক্ষত্রের মতো,
যার আলো প্রজ্বলিত হলেও, তার গরম থাকে না।
হৃদয়ে ভালোবাসা নেই, কিন্তু মুখে তার মুখরিত বর্ণনা,
মিথ্যে প্রেমের প্রতিফলন, এক অশুভ গাঁথুনি।
তারা প্রেমের ভাষা জানে, তবে সঞ্চয় নেই,
যেমন প্রেয়সীর জন্য কবিতায় সুর,
কিন্তু অন্তরে তীব্র শূন্যতা।
মুখে নানান আশ্বাস,
তবে কানে ছন্দের মতো শুনতে পাই—শুধু বয়ে আসা বাতাসের নিঃশব্দ সুর।
তারা, যেন অগণিত দিন রাতের মাঝে খুঁজে ফেরে নিজেকে,
এমন এক সাগরে ভাসে, যার তীরে কখনো পৌঁছায় না।
চেহারা হয়তো প্রেমের চিহ্ন বহন করে,
কিন্তু হৃদয় কোথাও হারিয়ে গেছে,
যে হৃদয়ে একটুকরো সদিচ্ছা বা অভ্যন্তরীণ পরিপূর্ণতা ছিল,
সেটি চিরকালীন দুঃখের মাঝে মিশে গেছে।
তাদের এই মুখাবয়বে যা আছে,
তা কেবল এক ধোঁকা—এক হৃদয়হীন অভ্যর্থনা,
যা প্রেমের ছদ্মবেশ ধারণ করে,
কিন্তু তার ভিতরে এক চিরন্তন শূন্যতা।
"আমার ভালোবাসা দরকার, প্রয়োজন ভালোবাসার, আমি ভালোবাসার অভাববোধে তৃষ্ণার্ত।"
আমার ভালোবাসা দরকার, প্রয়োজন ভালোবাসার,
যেন এক শুকনো মরুভূমিতে তৃষ্ণার্ত পথিক,
যার প্রতিটি পদক্ষেপে কেবল ইচ্ছার অশ্রু গড়িয়ে পড়ে,
কিন্তু কোনো জলাধার খুঁজে পায় না।
এমন এক তৃষ্ণা, যে কেবল জীবনের গভীরে মর্মন্তুদ অঙ্কুর তৈরি করে,
এবং দিনের শেষে, গভীর রাতে,
শুধু একটি নিঃশব্দ কাঁপন থাকে,
যা বলে, "কখন তুমি আসবে, ভালোবাসা?"
প্রতিটি প্রহরে অনুভব করি—এ যেন শূন্যতার গহীন অন্ধকার,
যেখানে একে একে ম্লান হয়ে যায় আমার সকল আশা,
কিন্তু হৃদয়ে জ্বলতে থাকে এক অবিনাশী আগুন,
এমন আগুন, যে কখনোই মিটে না,
যখন পর্যন্ত স্নিগ্ধ ভালোবাসার ছোঁয়া না পায়।
আমি ভালোবাসার অভাববোধে তৃষ্ণার্ত,
যেমন একটি হাহাকার সবার মাঝে হারিয়ে যায়,
কিন্তু কেও তো সেই সুর শুনে না।
তবে আমি জানি, এই অদৃশ্য হাহাকার একদিন
যে চিরকালীন প্রেমের ডাকে জাগবে,
যে আমাকে আশ্রয় দেবে, পরিপূর্ণ করবে এই শূন্যতা,
এবং একদিন জানবে, আমার ভালোবাসার প্রতিটি ঘ্রাণের চাহিদা।
প্রয়োজন ভালোবাসার, তবুও হৃদয়ে সেই প্রেমের অভাব,
এ যেন দৃষ্টির মাঝখানে ঝাপসা একটি সিলুয়েট,
যা কখনোই স্পষ্ট হয় না,
যতদিন না তুমি আসবে,
তবে আমি তৃষ্ণার্ত,
আর শুধু চাই তোমার ভালোবাসার এক ফোঁটা।
"এই পৃথিবীতে যা কিছু সুন্দর, অর্ধেক তার নর আর অর্ধেকই নারী।"
এই পৃথিবীতে যা কিছু সুন্দর,
অর্ধেক তার নর আর অর্ধেকই নারী,
যেন এক নক্ষত্রের দুই ভাগ,
যে দুটি আলোর মেলা, একে অপরকে আবেগে খুঁজে নেয়।
পুরুষের শক্তি, নারীর মাধুরী—
এক অমোঘ সুরে বেঁধে দেয় জীবনের কবিতা,
যেখানে শূন্যতা ছুঁয়ে যায় পূর্ণতার রূপ।
নারী এবং নর, একে অপরকে যেমন হাহাকার দেয়,
তেমনি একে অপরের মধ্যে অসীম প্রশান্তি খুঁজে পায়।
পুরুষের হাতে গড়া পৃথিবী,
নারীর হৃদয়ে শোভিত একটি স্বপ্ন—
এভাবেই এরা একে অপরের মাঝে পূর্ণতা পায়,
যেন দিন এবং রাত, শীত ও গ্রীষ্ম,
সব একে অপরকে আলিঙ্গন করে,
আর কখনোই বিরত হয় না।
নর যেমন শক্তির প্রতীক,
নারী তেমনি কোমলতার সৌন্দর্য,
তবে একে অপরের ছন্দের মধ্যে থাকে একটি অবিনাশী সুর,
যেখানে প্রেমের ভাষা ভাষী হয়ে ওঠে,
এবং সমস্ত পৃথিবী হয়ে ওঠে এক নৃত্যশালা।
নারী কিংবা নর—
অর্ধেক যার হৃদয়ে ফুল ফোটে,
অর্ধেক তার চোখে স্বপ্নের ভাষা জাগ্রত হয়।
এমন প্রেমই তো এই পৃথিবীর সোনালী রেশম,
যেখানে গুনগুন শব্দের মাঝে ভালোবাসা ছড়িয়ে যায়,
যেখানে কোনো বাঁধা নেই,
শুধু দুটি হৃদয়ের একে অপরকে খোঁজা,
যা কখনোই শেষ হয় না,
যতক্ষণ না দুজন মিলে এক অনির্বাচিত যাত্রায় এগিয়ে যায়।
এই পৃথিবী, যেখানে প্রতিটি সৌন্দর্য—
অর্ধেক তার নর, আর অর্ধেকই নারী।
"কিছু মানুষের চেহারায় ভালোবাসা থাকলেও অন্তরে এর ছিটেফোঁটাও থাকে না।"
কিছু মানুষের চেহারায় ভালোবাসা থাকলেও অন্তরে এর ছিটেফোঁটাও থাকে না,
যেমন সাগরের তীরে এক ক্ষণস্থায়ী ঢেউ,
যা উঁচু হয়ে ওঠে, কিন্তু তার গভীরতা শূন্য।
মুখে মিষ্টি কথা, চোখে লুকানো এক আলো,
কিন্তু ভিতরে জমে থাকা ঠাণ্ডা বরফ—
যে বরফ কখনো গলে না, কখনো ছুঁয়ে যায় না হৃদয়কে।
চেহারা তাদের ভালোবাসার চেহারা,
কিন্তু ভিতরে, এক নির্লিপ্ত শূন্যতার ছায়া।
যে ছায়া গভীর রাতের মতো আঁধারে ডুবে থাকে,
কখনো আলো দেখতে পায় না।
বিভ্রমের মাঝে তারা ভাসে,
মুখে প্রেমের কথা বলে,
কিন্তু হৃদয়ের কোণে এক নিঃসঙ্গতার কবিতা লেখা থাকে।
তারা জানে, ভালোবাসার ভাষা,
কিন্তু অনুভূতির অভাব।
প্রেমের মতো অভিনয় করা,
যে অভিনয় কখনোই বাস্তব হয় না,
কেবল কৃত্রিম আলোয় জ্বলতে থাকে,
অথবা এক মায়ার জাল ছড়ায়।
তাদের শব্দেরা সুন্দর,
কিন্তু হৃদয় থেকে এক চিঁড়ে পাওয়া যায় না,
যে চিঁড়ে মধুরতা ছড়ায়,
যে মধুরতা শুধু মুখেই সীমাবদ্ধ থাকে।
চেহারা ভালোবাসার মতো,
কিন্তু ভিতরে এক শূন্যতা—
এমন ভালোবাসা, যা কখনোই গভীর হয় না,
কেবল একপাক্ষিক অনুভূতি,
যে কখনো কারো হৃদয়ে প্রবাহিত হয় না।
এরা, যাদের প্রেমের গাথা সবার কাছে গল্প,
কিন্তু তাদের অন্তরে,
এক আকাশের নিচে,
শুধু ছটফট, অশান্তি, আর অভাব—
বিনিময়ে কিছুই থাকে না।
"তুমি আমাকে তোমার মিথ্যে ভালোবাসার মায়ায় জড়িয়ে দিয়েছো"
তুমি আমাকে তোমার মিথ্যে ভালোবাসার মায়ায় জড়িয়ে দিয়েছো,
যেমন এক বিভ্রম, যার গভীরে কোনো সুর নেই,
কেবল একটি অস্থিরতা, যা চুপচাপ আমাকে গ্রাস করে।
আমি তোমাকে ভালোবাসলাম ঠিকই,
কিন্তু তুমি, তুমি আমায় ভালোবাসলে না—
এ যেন এক তৃষ্ণার্ত নদী,
যা নদীরই জল থেকে বঞ্চিত,
তবুও তার পাড়ে গড়ে ওঠে উজ্জ্বল একটি বেলাভূমি,
যেখানে প্রকৃত প্রেমের ঢেউ কখনোই আছড়ে পড়ে না।
আমি তোমাকে ধরা দিলাম,
কিন্তু তুমি, তুমি আমাকে ধরে রাখলে না—
যেন একটি স্নিগ্ধ রাত,
যেখানে চাঁদ তার আলো দিয়ে পথ দেখায়,
কিন্তু সেই পথের শেষ নেই,
কেবল শূন্যতার চিহ্ন।
তোমার কাছে পৌঁছানোর আশা ছিলো,
কিন্তু তুমি দূরত্ব বাড়িয়ে চললে,
অথবা আমাকে তোমার হাত থেকে পড়ে যেতে দিলে,
যে পতন একেবারে হৃদয়ের গভীরে পৌঁছাল।
তোমার চেহারায় প্রেম ছিল,
কিন্তু হৃদয়ে তার ছিটেফোঁটাও ছিল না—
যেন এক জলের বুদবুদ,
যে সৃষ্টি হয়, কিন্তু অচিরেই মিলিয়ে যায়।
আমি তোমাকে চাইলাম,
অথচ তুমি আমাকে চাইলে না—
এমন এক নির্মম দুঃখ,
যে কখনোই প্রকাশ পায় না,
কেবল হৃদয়ের গহীনে জমে থাকে এক গভীর ব্যথা।
কতো কথাই তো রেখেছি বুকের বা-পাশে,
যেখানে হৃদয়ে থাকে সেই গভীর প্রেম,
যা তুমি কখনো শুনলে না,
কখনো বুঝলে না—
এটি ছিলো এক নিঃশব্দ প্রেম,
যা তোমার কাছে পৌঁছানোর আগেই হারিয়ে গেলো।
আমার কথা ছিলো, কিন্তু তুমি তাতে কখনোই গুরুত্ব দিলে না,
এবং আমি, এক চিরকালীন শূন্যতায়,
প্রেমের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম,
তার প্রতিটি ধ্বনি হারিয়ে গেলো।
"আমি তোমারে মন উজাড় করে ভালোবাসলাম অথচ তুমি ভাসলা না। "
আমি তোমারে মন উজাড় করে ভালোবাসলাম,
অথচ তুমি ভাসলা না—
এ যেন এক অবহেলার নদী,
যার স্রোত চুপচাপ আমার হৃদয়ের দিকে চলে আসে,
কিন্তু তোমার কাছে পৌঁছানোর আগেই হারিয়ে যায়।
তোমার মধ্যে ছিলো এক শূন্যতা,
যা কখনো পূর্ণ হয়নি,
কেবল আমি এক উজ্জ্বল চাহনি ছিলাম,
যে চাহনি তুমি কখনোই দেখো না।
পৃথিবীতে যে কতো রকমের সম্পর্ক হয়,
তার সাথে কতো শতো ধরনের যন্ত্রণা—
যে সম্পর্কগুলো কোনো নাম পায় না,
এমনই এক সম্পর্কের মাঝে আটকা পড়লাম আমি,
যেখানে মায়া ছিল, কিন্তু ঘোর ছিল না,
ভালোবাসা ছিল, কিন্তু সান্নিধ্য ছিল না।
যে যন্ত্রণা কখনোই ভাষায় প্রকাশ করা যায় না,
এমন যন্ত্রণা, যা হৃদয়ে গহীন গর্তের মতো খোঁড়া,
এমন যন্ত্রণা, যা প্রতিটি নিঃশ্বাসে অনুভূত হয়,
কিন্তু মুখে কোনো শব্দ নেই,
কেবল এক নিষ্ফল আহাজারি।
কখনো কখনো বুকের ভেতর যে হৃদপিন্ড থাকে,
সেই হৃদপেশি ছিড়ে যাওয়ার মতো ব্যথা অনুভব হয়,
এমন ব্যথা, যা কোনো ঔষধে সারবে না,
যা কখনোই অশ্রু হয়ে ঝরবে না,
কেবল অন্তরে গুমে থাকে এক অমোঘ দুঃখ,
যা জীবনভর সঙ্গী হয়ে থাকে।
কিন্তু যাদের জন্য অনুভব হয়,
তারা তা টেরও পায় না!
তারা যে দূরে থাকে,
তারা যে কখনোই জানে না,
যে ভালোবাসা অদৃশ্য হলেও সেই ব্যথা,
তাদের হৃদয়ে পৌঁছায় না—
এমন এক প্রহেলিকা,
যেখানে প্রেমের কোনো প্রমাণ থাকে না,
কেবল শূন্যতার প্রলেপ পড়ে থাকে,
যা পৃথিবীর সব শব্দে বোঝানো যায় না।
"ভালোবাসার নিঃশব্দ যন্ত্রণা"
আমি তোমারে মন উজাড় করে ভালোবাসলাম,
তবুও তুমি ভাসলা না,
যেন একান্ত মরুভূমির পথে হারিয়ে যাওয়া পাখি,
যে উড়ান শিখে, কিন্তু কখনো ফিরে আসবে না।
আমার হৃদয়ে প্রতিটি ধ্বনি ছিল তোমার নাম,
তবে তুমি, তুমি কখনো সেই ধ্বনি শুনলে না।
কেবল আমি একা, এক চিরন্তন আশা,
যে আশা কখনোই পূর্ণ হতে চায় না।
পৃথিবীতে কত রকমের সম্পর্ক হয়,
কিন্তু তাদের ছায়া কত অদ্ভুত,
কিছু সম্পর্কের কোনো নাম হয় না,
যে নামের শব্দগুলো কখনো মুখে আসে না।
এমন সম্পর্ক, যেখানে ভালোবাসা না থাকলেও,
অবিরাম ব্যথা আসে,
যে ব্যথা কখনো ভাষায় প্রকাশ করা যায় না,
যে ব্যথা, যে যন্ত্রণা,
শুধু অন্তরের গভীরে গুমে থাকে,
যে অনুভূতি,
যা শুধুই এক অদৃশ্য দুঃখের চিহ্ন হয়ে থাকে।
কখনো কখনো, বুকের ভেতর যে হৃদপিন্ড থাকে,
সেই হৃদপেশি ছিড়ে যাওয়ার মতো ব্যথা অনুভব হয়,
এমন ব্যথা, যা শব্দে কখনো প্রকাশিত হয় না,
কিন্তু প্রতিটি শ্বাসে মনে হয়,
বুকে যেন আর কোনো পৃথিবী নেই।
এমন ব্যথা, যা সময়ের সাথে আরও তীব্র হয়,
এমন ব্যথা, যা সারাজীবন খোঁজে তার মুক্তি,
কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা খুঁজে পায় না।
তবে, যাদের জন্য এই ব্যথা অনুভব হয়,
তারা কি জানে তার আসল ব্যথা?
তারা কি কখনো টের পায়,
যে নিঃশব্দে ছড়িয়ে থাকা বেদনা,
কেবল তাদের জন্য, এক মুখোশের আড়ালে
কাঁপতে থাকা হৃদয়ের স্বীকারোক্তি।
তারা কি জানে, যে চাহনি শুধু তাদেরই জন্য,
যে ভালোবাসা কেবল তাদের জন্য অপেক্ষা করে,
তবে তারা কখনোই বুঝে না,
এমন এক নিঃশব্দ কষ্ট,
যা হৃদয়ের অন্তিম সীমানায় রয়ে যায়,
যতক্ষণ না তারা ফিরিয়ে দেয় সেই ভালোবাসার প্রতিটি স্পন্দন।
"রবের প্রেম"
রবের প্রেম—
এ এক অচেনা, অদৃশ্য সুখের সুর,
যে প্রেম শুধু হৃদয়ের ভেতর জন্ম নেয়,
আর তার গতি থাকে অনন্ত,
যতদূর চোখ যায়, ততদূর ছড়িয়ে যায়।
এ প্রেমের কোন বাঁধা নেই,
কোন সীমা নেই,
এ শুধু প্রেম,
যে প্রেম কখনো হারায় না,
কেবল এক সঙ্গীতের মতো
ভেসে যায় জীবনসঙ্গী হয়ে,
তোমার মুঠোফোনের পর্দায় কিংবা বুকের গভীরে।
রবের প্রেম—
যেন প্রাচীন নদী,
যার স্রোত কখনো থামে না,
কিন্তু শান্ত থাকে,
এ যেন সমুদ্রের অশান্ত ঢেউয়ের মতো,
যা সর্বদা তোমার পাশে,
কিন্তু কখনোই তোমাকে ঠেলে দেয় না,
শুধু স্নিগ্ধভাবে আঁকড়ে ধরে রাখে।
এ প্রেমের জন্য মানুষ ছুটে যায় অজানায়,
কিন্তু শেষ পর্যন্ত সে প্রেমই তাকে ঘিরে ফেলে।
রবের প্রেম—
এ এক অমোঘ শাশ্বত বোধ,
যেখানে জীবনের মাধুরী লুকানো,
যেখানে বিষাদও কখনো সুখের অঙ্গনে পরিণত হয়,
এ এমন এক প্রেম,
যা না চাওয়ার পরেও তোমাকে আকর্ষণ করে,
একথা বোঝাতে পারে না,
কিন্তু তোমার ভিতর থেকে তা অনুভব হয়।
এ প্রেম অন্ধকারের মধ্যে আলো হয়ে আসে,
এ প্রেমে মিশে থাকে ভেদাভেদহীন সত্তা,
এ প্রেমের সন্ধান তুমি পাবে না,
কিন্তু তুমি যখন তার মধ্যে হবে,
তখন বুঝবে—এ প্রেম জীবনের প্রকৃত রূপ।
রবের প্রেম—
যেন আকাশের দিকে উঠে যাওয়া একটি মেঘ,
যা এক বিন্দু জল নিয়ে আসে না,
কিন্তু সেই জলই হয়ে ওঠে পৃথিবীর সমস্ত সুন্দর।
এ প্রেমের ভাষা কোনো দেহে থাকেনা,
কিন্তু তা রচিত থাকে প্রতিটি অনুভূতিতে,
এ প্রেম জীবনের তীব্রতা—
যেখানে শব্দগুলো হারিয়ে যায়,
কেবল একটি নিঃশব্দ অনুভূতি থেকে যায়।
এ প্রেম সত্য,
এ প্রেম চিরকাল।
"আল্লাহর রহমত"
আল্লাহর রহমত যে কবে ছোঁয়,
অন্ধকারে ত্বহীদি আলো হয়ে যায়,
পথহারা যে, সে পথ পায়,
হৃদয়ের মাঝে আল্লাহরই সাইয়া।
রেফাতুল্লাহ, তারই দয়া,
জীবনের পথে, স্নেহের ছায়া,
যে দিশাহীন, সে পথ পায়,
আল্লাহর রহমত মনের মায়া।
চোখে আঁধার, অশ্রু, বেদনা,
আল্লাহর নামেই মেলে শান্তি,
যে আঁকড়ে ধরে তার হুকুম,
আল্লাহর গুণে, শান্তির সংগীত।
রেফাতুল্লাহ, ত্বহীদি আলোর দীপ,
রহমতের মধ্যে জীবন হোক সজীব।
"তওবার পথে"
তওবার পথে যখনই হেঁটে যাই,
পাপের বোঝা, আল্লাহর কাছে ফেলে দেই,
দু’চোখে অশ্রু, বুকের গভীরে বেদনা,
তবে জানি, আল্লাহ তওবা কবুল করেন, না থাকে কোনো খতনা।
পাপের বোঝা ছেড়ে চলি,
আল্লাহর কাছে ফিরে ফিরে,
আত্মা সুদ্ধি পায় যখনই,
তার রহমতে নতুন জীবন হয় রচিত।
বিধি-বাঁধা থেকে বেরিয়ে গিয়ে,
জীবনে আলোর সন্ধানে,
নতুন করে শুরু করি,
তওবার পথে, আল্লাহর সান্নিধ্যে।
যত দূর গেছি, তওবার পথে,
আল্লাহর দয়া হবে সাথে।
"রহমতের ছায়ায়"
রহমতের ছায়ায় ভেসে চলে,
প্রত্যেকটি পদক্ষেপ, যেন আল্লাহর রহমত,
এই পৃথিবীতে যতই চলি,
তার অশেষ দয়া থাকে সঙ্গী।
পাপের পাহাড়ের নিচে থাকি,
আল্লাহর কাছে গিয়ে কাঁদি,
বিনা পাথেয় যেভাবে পথ খুঁজে পাই,
আল্লাহর রহমত, মনের গভীরে জমে যায়।
জীবন যখন বেসামাল হয়,
আল্লাহর নামেই সান্ত্বনা পায়,
একটি বিশ্বাস, অটল ও সত্য,
আল্লাহ ছাড়া কেউ নেই আমার সাথে।
রহমতের ছায়ায় মুছে যায় সব দুঃখ,
আল্লাহর সাথে আমার পথ হয় সুখ।
"আল্লাহর পথে"
আল্লাহর পথে যখন পা রাখি,
সব অন্ধকার, আলোর মধ্যে মিশে যায়,
হৃদয়ে তার নামে বিশ্বাস রাখি,
জীবনের সাথে, তাকে জড়িয়ে ফেলে যায়।
আমার জীবন যখন বিক্ষিপ্ত ছিল,
আল্লাহর দিকে তাকিয়ে আমি শিখলাম,
পৃথিবী, আসমান, সব তার ইচ্ছায়,
আল্লাহ ছাড়া আর কিছুও নেই সঠিক।
ধরা দেবার মতো পথ যখন বন্ধ,
আল্লাহর দয়ায় খুলে যায় সব দরজা,
অবিশ্বাসী যখন হতাশা ছড়ায়,
আল্লাহ তায়ালা দিয়ে যায় এক ভরসার দেখা।
আল্লাহর পথে চলতে চলতে,
বিশ্বাসের রূপরেখা পেতে।
"আল্লাহর পথের আলো"
আল্লাহর পথে চলি আমি, দৃষ্টির সঙ্গী সেই আলো,
তাঁর রহমতের ছায়ায় মিষ্টি, পথযাত্রী মোর হালচাল।
যতই অন্ধকার, তাঁর নাম জপলে, আলো হয়ে যায়,
বিশ্বাসের পথের প্রতিটি ধাপ, আল্লাহর রহমতেই শায়।
নামাজে আমি অটুট, দোয়া করি প্রতি দিন,
পৃথিবীর সব কষ্ট যেন মুছে যায় তাঁর কাছে বিনীত চীন।
আল্লাহ ছাড়া আর কেউ নেই, তাঁর সান্নিধ্য আমার,
যত দূর যাই, তত কাছে পাই, তাঁর মধুর দয়ার পরশ।
রহমত তাঁর অশেষ, কেউ জানে না কত গভীর,
সৎ পথে চলা ছাড়া কিচ্ছু না, সে পথেই থাকে নির্ভীর।
পাপগুলো যখন ফিরে আসে, আল্লাহর নামেই তা ভুলে যায়,
পুনর্জন্মের মতো, তাঁর দয়াতে জীবন জেগে যায়।
ধৈর্য এবং বিশ্বাস, প্রতিটি কাজের সঙ্গী,
জীবন হয়ে ওঠে সুন্দর, যখন তাওহীদ থাকে অন্তরঙ্গী।
সতর্কতা হারিয়ে যদি কখনো চলি ভুল পথে,
আল্লাহর শুদ্ধ পথেই ফিরি, তাঁর কাছেই খুঁজি সঠিক দিকে।
0 coment rios: