ঢাবি (ক্যাম্পাস প্রতিনিধি):
গত কিছুদিন আগে, বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আপু আমার কাছে এসেছিলেন এবং অভিযোগ করেছিলেন যে, তার বয়ফ্রেন্ড তাকে বিয়ে না করে অন্য একজন মেয়েকে বিয়ে করেছেন। তাদের মধ্যে অনেকদিন ধরে প্রেম ছিল এবং তিনি বিশ্বাস করেছিলেন যে, ওই ছেলে তাকে বিয়ে করবে। তারা একে অপরের সাথে শারীরিক সম্পর্কও স্থাপন করেছিলেন। এই পরিস্থিতিতে আপু মামলা করার চিন্তা করছেন, কারণ তার কাছে এটি বিশ্বাস ভঙ্গ এবং প্রতারণার মতো মনে হয়েছে।
এই ঘটনার আইনি দিক সম্পর্কে আমি কিছু খোঁজ নিয়ে দেখলাম। বাংলাদেশে ১৮ বছর বয়সের উপরে নারী-পুরুষের মধ্যে বিবাহপূর্ব শারীরিক সম্পর্ককে অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়নি। তবে, প্রতারণা বা বিশ্বাস ভঙ্গের জন্য আইন রয়েছে এবং এসব ক্ষেত্রে শাস্তি হতে পারে।
বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী, সরাসরি "বিবাহ-পূর্ব" সেক্সকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়নি। তবে, যদি কোনো ব্যক্তি অন্যকে প্রতারণা করে বা বিশ্বাস ভঙ্গ করে, তাহলে এটি আইনি কার্যক্রমের আওতায় আসতে পারে।
এখানে প্রশ্ন হলো— যদি একজন ছেলে-মেয়ে পারস্পরিক সম্মতিতে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে এবং পরে তাদের সম্পর্কের অবনতি হয়, তাহলে এটি ধর্ষণ হবে কীভাবে? যদি সেক্স বিবাহের প্রলোভনে হয়, তাহলে কি এটি ধর্ষণ হিসেবে গণ্য হবে? এখানে আইনি প্রহসন এবং অসমতা স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো— বাংলাদেশের দণ্ডবিধি ১৮৬০-এর ধারা ৪৯৭ অনুযায়ী, বিবাহিত পুরুষ যদি অন্য কোনো বিবাহিত নারীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন, তবে তা "ব্যভিচার" (adultery) হিসেবে গণ্য হবে এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তবে, এখানে শুধু পুরুষকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়, নারীকে শাস্তির আওতায় আনা হয় না। কিন্তু, একটি প্রশ্ন ওঠে— যদি নারীর সম্মতিতেই সেক্স হয়, তাহলে কেবল পুরুষের শাস্তি কেন হবে?
এছাড়া, বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে, ১৮ বছরের নিচে কোনো ব্যক্তির সাথে শারীরিক সম্পর্ক হলে সেটা ধর্ষণ হিসেবে গণ্য হয়, এমনকি যদি সম্মতি থাকে তাও। এই আইনের আওতায়, ১৮ বছরের নিচের ব্যক্তির যৌন সম্মতি বৈধ হিসেবে গণ্য করা হয় না, যার ফলে সেই ব্যক্তির সাথে সেক্স করার জন্য অভিযুক্ত ব্যক্তি ধর্ষণের দায়ে শাস্তি পেতে পারেন।
একইভাবে, গ্রামাঞ্চলে বহু মেয়ের বিয়ে হয়ে থাকে ১৮ বছরের আগেই, যেখানে তাদের শারীরিকভাবে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পরও বিয়ে সংক্রান্ত আইনি জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে, যদি ১৮ বছরের নিচে কোনো মেয়ের সম্মতিতে সেক্স হয়, তা আইনত ধর্ষণ হিসেবে গণ্য হতে পারে, যদিও তারা শারীরিকভাবে প্রাপ্তবয়স্ক।
ধর্ষণের সংজ্ঞা এবং এর আইনি দিকগুলো বর্তমানে অনেক জটিল। 'বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ' এর আইন নিয়ে আলোচনা চলছে, কিন্তু আইনের প্রয়োগে এই ধরনের বৈষম্য ও প্রহসন সমাজে নতুন বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে।
এই বিষয়ে আরও বিস্তারিত পর্যালোচনা এবং আইনি পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত। তবে, এটি স্পষ্ট যে বাংলাদেশের আইনে কিছু অমীমাংসিত এবং বৈষম্যমূলক দিক রয়েছে, যা যৌন সহিংসতা এবং সম্পর্কের প্রতি ন্যায্য দৃষ্টিভঙ্গির অভাব সৃষ্টি করতে পারে।
বিশ্বাসভঙ্গ ও প্রতারণা - আইনি বিশ্লেষণ:
গত কিছু মাস আগে, বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আপু আমাকে ম্যাসেজ করেছিলেন এবং অভিযোগ করেছেন যে, তার বয়ফ্রেন্ড তাকে বিয়ে না করে অন্য একটি মেয়েকে বিয়ে করেছেন। এই ঘটনার পেছনে রয়েছে একটি প্রতারণার গল্প, যেখানে ওই ছেলে তার প্রেমিকাকে বিয়ে করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন এবং তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্কও হয়েছিল। এখন আপু এই ছেলের বিরুদ্ধে মামলা করতে চান, কারণ তিনি বিশ্বাস করেন যে, ওই ছেলে তাকে প্রতারণা করেছেন এবং তার সাথে অন্যায় করেছেন।
এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল— আইনি দৃষ্টিকোণ থেকে, বাংলাদেশে ১৮ বছরের উপরের নারী-পুরুষের মধ্যে বিবাহপূর্ব শারীরিক সম্পর্ক কোনো দণ্ডবিধি বা অপরাধ হিসেবে গণ্য হয় না। তবে, যদি কোনো ব্যক্তি অন্যকে বিশ্বাসভঙ্গ বা প্রতারণা করে, সেক্ষেত্রে শাস্তির বিধান রয়েছে। বাংলাদেশের দণ্ডবিধি অনুযায়ী, সরাসরি "বিবাহ-পূর্ব সেক্স" কে অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়নি, কিন্তু যদি কোনো ব্যক্তি মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে, বা প্রতারণার মাধ্যমে, অন্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করেন, তাহলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে।
ধর্ষণ আইন ও সম্পর্কের অবনতি:
এখানে প্রশ্ন ওঠে, যদি একটি ছেলে-মেয়ে পারস্পরিক সম্মতিতে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন এবং পরে তাদের সম্পর্কের অবনতি হয়, তাহলে তা ধর্ষণ হয়ে যায় কীভাবে? এটি একটি জটিল বিষয়, কারণ আইনের ভাষায় "ধর্ষণ" বলতে সাধারণত জোরপূর্বক সেক্স বা সম্মতির বাইরে গিয়ে সেক্স করা বোঝানো হয়। তবে, যদি সেক্স বিবাহের প্রলোভনে হয়ে থাকে, তাহলে কি তা ধর্ষণ হিসেবে গণ্য হবে? এই প্রশ্নটি আইনের অস্পষ্টতা এবং প্রহসনের প্রতি ইঙ্গিত দেয়।
ব্যভিচার (Adultery) এবং বৈষম্যমূলক আইন:
বাংলাদেশের দণ্ডবিধি, ১৮৬০-এর ধারা ৪৯৭ অনুযায়ী, যদি কোনো বিবাহিত পুরুষ তার স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া অন্য নারীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন, তবে এটি "ব্যভিচার" (adultery) হিসেবে গণ্য হয় এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তবে, এখানে নারীকে শাস্তির আওতায় আনা হয়নি; শুধুমাত্র পুরুষকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। এটি একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, কারণ এই আইনে নারীর বিরুদ্ধে শাস্তির কোনো বিধান নেই, যা অনেক সময় সমাজে বৈষম্য সৃষ্টি করতে পারে। এমনকি, পুরুষও সেই একই ধরনের শারীরিক সম্পর্কের জন্য এককভাবে দোষী হয়, তবে নারীর জন্য একই আইন কার্যকর হয় না।
১৮ বছরের নিচে বয়সী মেয়ের শারীরিক সম্পর্ক:
বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী, ১৮ বছরের নিচে কোনো মেয়ে বা ছেলে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করলে, সেটা ধর্ষণ হিসেবে গণ্য হয়, এমনকি যদি ওই মেয়ে সম্মতিও দিয়ে থাকে। দণ্ডবিধি, ১৮৬০-এর ধারা ৩৭৫ অনুযায়ী, ১৮ বছরের কম বয়সী কাউকে যৌন সহিংসতা বা সেক্স করলে তা ধর্ষণ হিসেবে গণ্য হবে, এবং অভিযুক্ত ব্যক্তি শাস্তির আওতায় আসবে। এই শাস্তি হতে পারে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা মৃত্যুদণ্ড।
তবে, বাস্তবে, বাংলাদেশে অনেক গ্রামাঞ্চলে মেয়েদের বিয়ে হয়ে যায় ১৮ বছরের আগে, যেখানে তাদের শারীরিকভাবে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পরেও আইনগত জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে, একজন পুরুষ যদি ১৮ বছরের নিচে বয়সী কিশোরীকে বিয়ে করে, এবং পরে যদি তার স্ত্রীর অভিযোগ আসে যে, তাকে ধর্ষণ করা হচ্ছে, তখন আইনগতভাবে ওই পুরুষকে ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত করা হতে পারে, যদিও এটি একটি জটিল বিষয়।
বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ:
বর্তমানে, বাংলাদেশে ‘বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ’ এর শাস্তি কমিয়ে দেওয়া হয়েছে— যেটি আগে ছিল যাবজ্জীবন, এখন তা সাত বছর পর্যন্ত কমানো হয়েছে। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক ও আইনি পরিবর্তন, কারণ এটি পুরুষদের প্রতি এককভাবে দায় চাপানো এবং তাদের শাস্তি দেওয়ার প্রবণতা নিয়েও প্রশ্ন তোলে। যেমন, যদি কোনো মেয়ে এক পুরুষকে বিয়ের কথা দিয়ে অন্য পুরুষকে বিয়ে করে, তাহলে ওই পুরুষ কেন শাস্তি পাবেন না?
এখানে নারীর সম্মতির কথা বলা হলেও, মূলত আইনটির প্রয়োগে যে সমতা নেই, তা সামাজিক ন্যায়বিচারের প্রতি প্রশ্ন তুলে ধরে।
আইনগত বৈষম্য ও সামাজিক প্রেক্ষিত:
বাংলাদেশের বর্তমান আইন ব্যবস্থা এবং এর প্রয়োগে অনেক সময় বৈষম্য তৈরি হয়। বিশেষ করে, ধর্ষণ ও শারীরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে পুরুষদের একক দায়বদ্ধতা বিষয়টি বেশ উদ্বেগজনক, কারণ এখানে নারীদের ইচ্ছা এবং পারস্পরিক সম্মতি উপেক্ষা করা হচ্ছে। সেক্স বা সম্পর্ক একটি পারস্পরিক বিষয় হওয়া উচিত, যেখানে উভয় পক্ষের সম্মতি ও স্বাধীনতা থাকে, এবং এটি আইনি দৃষ্টিকোণ থেকেও প্রতিষ্ঠিত হওয়া উচিত।
ধর্ষণ আইন এবং পারস্পরিক সম্মতির ক্ষেত্রে আইনি বিশ্লেষণ এবং পুনর্বিবেচনা জরুরি, যেন সমাজে ন্যায্যতা এবং সঠিক বিচার প্রতিষ্ঠিত হতে পারে।
এই বিষয়টি একটি অত্যন্ত গভীর সামাজিক ও আইনি আলোচনার বিষয়, এবং এর মধ্যে অনেক সূক্ষ্ম দিক রয়েছে যেগুলোর প্রতিফলন আইনের মধ্যে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনার তাগিদ দেয়।
0 coment rios: